মাত্র তিনটে ডিমকে কেন্দ্র করে খুন! জগদ্ধাত্রী নিরঞ্জনে বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল যুবকের

হুগলির কামারপুকুরে জগদ্ধাত্রী পুজোর নিরঞ্জনের রাতে তিনটি ডিম খাওয়া নিয়ে বচসায় যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। মৃত রামচন্দ্র ঘোষাল, অভিযুক্ত বন্ধু রাজু মাইতি আটক।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
dead

নিজস্ব সংবাদদাতা: খুশি আর আনন্দের রাত। জগদ্ধাত্রী পুজোর নিরঞ্জন শেষে এলাকায় চলছিল খাওয়া–দাওয়ার স্মরণীয় আয়োজন। কিন্তু আনন্দের সেই পরিবেশ মুহূর্তেই পরিণত হল রক্তাক্ত ট্র্যাজেডিতে। হুগলির কামারপুকুরের লাহাবাজারে তিনটি ডিম খাওয়া নিয়ে তর্ক বাধে কয়েকজন যুবকের মধ্যে। আর সেই তর্কই শেষ পর্যন্ত কেড়ে নিল ২৬ বছর বয়সী রামচন্দ্র ঘোষালের প্রাণ।

ঘটনা শুক্রবার রাতের। নিরঞ্জন শেষ হওয়ার পর ক্লাবের সামনে খাবার দেওয়া হচ্ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, সবার জন্য রাখা তিনটি ডিম খেয়ে ফেলেন রামচন্দ্র। তাতে হইচই শুরু হয়। প্রথমে কথা কাটাকাটি, তারপর উত্তেজনা। খাওয়াদাওয়া শেষে বাড়ি ফেরার সময় আবার শুরু তর্ক–বিতর্ক।

অভিযোগ অনুযায়ী, বন্ধু রাজু মাইতি নাকি একজন প্রতিবন্ধীর ক্রাচ তুলে রামচন্দ্রের মাথা ও ঘাড়ে আঘাত করেন। একের পর এক আঘাতে জ্ঞান হারান রামচন্দ্র। তাঁকে নিকটবর্তী শ্রীধাম প্রতীক্ষালয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে কামারপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত রাজু মাইতিকে। কিন্তু প্রশ্নের মুখে পড়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারণ ঘটনাস্থল থেকে কয়েক মিটার দূরেই রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। কিছুদিন আগেই এলাকায় লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা—প্রশাসনের নিরাপত্তা উদ্যোগের ঢাক পেটানো হয়েছিল। এত কিছুর পরও এমন নৃশংস ঘটনা! স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ তৎক্ষণাত কোনও পদক্ষেপ করেনি।

hand-dead-victim-woman-covered-600nw-
ফাইল চিত্র

শোক ও ক্ষোভে ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিবার। রামচন্দ্রের বাবা তারক ঘোষাল কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
“আমার ছেলেকে যখন মারা হচ্ছিল, কেউ আমাকে খবর দিল না। ক্লাবের ছেলেরা কিছু করল না। যারা আমার ছেলেকে মারল, তাদের ফাঁসি চাই। সামনেই মেয়ের বিয়ে—এখন কীভাবে করব?”

ক্লাবের সম্পাদক আশিস দে দাবি করেছেন, সবাই খাওয়াদাওয়া শেষে চলে গিয়েছিলেন। এরপর কী ঘটেছে, তারা জানেন না। তবে স্থানীয়রা বলছেন, পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগেই প্রতিরোধ সম্ভব ছিল।

এখন এলাকায় পুলিশ মোতায়েন। তদন্ত চলছে। কিন্তু তৈরি হয়েছে আতঙ্ক—জগদ্ধাত্রী পুজোর উৎসবের রাত যে এমন ভয়ানক অধ্যায় লিখে যাবে, ভাবেনি কেউ।