/anm-bengali/media/media_files/2025/07/11/whatsam-2025-07-11-13-39-33.jpeg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে ফের রাজনৈতিক রক্তক্ষয়। বৃহস্পতিবার রাতে বিজয়গঞ্জ বাজার এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি চালিয়ে খুন করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা রেজ্জাক খাঁ-কে। জানা গেছে, আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তৃণমূলের এই পরিচিত মুখ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রেজ্জাক খাঁ তখন বিজয়গঞ্জ বাজারের কাছাকাছি এলাকায় ছিলেন। সেখানেই ওঁকে লক্ষ্য করে হঠাৎ একদল দুষ্কৃতি পরপর গুলি চালায়। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন রেজ্জাক। পরে তাঁর উপর ধারালো অস্ত্র দিয়েও হামলা চালানো হয়। পুরো ঘটনাটি মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকায়।
/filters:format(webp)/anm-bengali/media/media_files/2025/07/11/tmc-leader-bhangar-2025-07-11-12-29-00.jpg)
নিহত রেজ্জাক খাঁ ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় নেতা, এবং ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ বলে দলীয় সূত্রে খবর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দলের সংগঠন মজবুত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করতেন এবং বিধানসভা কমিটির সদস্য হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। স্থানীয়দের মতে, তাঁর জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতাই এই হামলার পেছনে মূল কারণ হয়ে থাকতে পারে।
ঘটনার পর থেকেই ভাঙড়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারির দাবিতে। এই খুনকে ‘পরিকল্পিত হামলা’ বলে দাবি করছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এই ঘটনার পর বিধায়ক শওকত মোল্লা বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। সরাসরি আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর নাম করে তিনি বলেন, “নওশাদ সিদ্দিকীর মদতেই খুন করা হয়েছে রেজ্জাককে। বিকেল থেকে দুটো মিটিং সেরে বাড়ি ফিরছিল সে। তখনই গুলি করে ও কুপিয়ে খুন করা হয়। ভাঙড়ে আইএসএফের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে, সেই হতাশা থেকেই এই কাপুরুষোচিত হামলা।”
অন্যদিকে, পুলিশ জানিয়েছে যে তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ। দুষ্কৃতীরা কারা, কীভাবে হামলা চালাল, তা জানতে চলছে জোর তল্লাশি।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের একবার উত্তপ্ত রাজনৈতিক আবহ। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই খুন রাজনৈতিক সংঘর্ষের নতুন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
রাজনৈতিক মহলেও এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতোর। বিধায়ক সওকত মোল্লা সরাসরি আঙুল তুলেছেন আইএসএফ-র দিকে। তাঁর দাবি, “ভাঙড়ে আইএসএফ-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই রাজ্জাককে খুন করেছে।” অন্যদিকে, আইএসএফ-এর পাল্টা অভিযোগ— “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন রাজ্জাক খাঁ।”
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই বারবার রাজনৈতিক হিংসায় জর্জরিত ভাঙড়। মনোনয়ন থেকে ফলপ্রকাশ পর্যন্ত রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল গোটা অঞ্চল। সেই রক্তের দাগ এখনও শুকোয়নি। এবার বিধানসভা ভোটের আগেই ফের খুন রাজনীতির মঞ্চে।
তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের দাবি, এই খুনের পিছনে রয়েছে নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক পরিকল্পনা। অভিযোগের তীর যাচ্ছে বিরোধী শিবিরের দিকে। তদন্তের ভার নিয়ে এখন সরব রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তারাও।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us