রাস্তা নেই, তবু বাঁচতে চাই—দুর্গাপুরে মৃত্যুর সঙ্গে সহবাস!

দুর্গাপুরে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ।

author-image
Aniket
New Update
Screenshot 2025-07-26 1.00.41 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুর: স্মার্ট শহরের তকমা গায়ে জুড়লেও বাস্তবে দুর্গাপুরের একাংশ যেন মৃত্যুফাঁদে দাঁড়িয়ে। শহরের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্ত পল্লী এলাকার ক্যানেল পাড়ের রাস্তাটি এখন কার্যত মৃত্যু-জাল। রাস্তার বুক চিরে বেরিয়ে এসেছে লোহার রড, জায়গায় জায়গায় ধস, মাঝে মাঝেই রাস্তা বসে যাচ্ছে—এমনকি পায়ে হেঁটে চলাও হয়ে উঠেছে দুঃসাধ্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বছরের পর বছর ধরে চলা এই সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান আজও আসেনি। কেউ অসুস্থ হলে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে প্রতিদিন রীতিমতো জীবন হাতে করে রাস্তা পেরোতে বাধ্য হচ্ছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বিশ্বজিৎ সমাদ্দারের অভিযোগ, “এই রাস্তা এখন ব্যবহারই করি না। ভয় হয়। কেউ অসুস্থ হলে দৌড়ে গাড়ি এনে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াও অসম্ভব। রাস্তা এতটাই খারাপ।”

স্থানীয়দের আরো অভিযোগ, বছর দুয়েক আগে এই রাস্তা নির্মাণ হয়েছিল। কিন্তু তৈরি হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ধস নেমেছিল প্রথমবার। তারপর একাধিকবার রাস্তা বসে গেছে। মাস সাতেক আগে দুর্গাপুর নগর নিগমের ইঞ্জিনিয়াররা এলাকা পরিদর্শন করলেও আজ পর্যন্ত কোনও মেরামতির কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক নেতারা এলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও বর্তমান জেলা বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি একসময় তৃণমূল করতাম, এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। আর সেই ব্যক্তিগত রাগের জেরে পুরো এলাকাকে শাস্তি দিচ্ছে শাসকদল। সাধারণ মানুষ আজ মৃত্যুর মুখে পড়ে আছে, এটা শুধু অবহেলা নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিহিংসা।” তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ধর্মেন্দ্র যাদব। তিনি বলেন, “রাজনীতির কোনো ব্যাপার নেই এখানে। বিজেপি মিথ্যে কথা বলছে। সমস্যা আমরা জানি, কাজও করা হবে।” স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত সংস্কার না হলে বড়সড় বিপদ অনিবার্য। প্রশ্ন উঠছে, সুকান্ত পল্লির এই ভাঙা রাস্তায় আর কতদিন ধরে চলবে অবহেলা আর রাজনৈতিক দোষারোপের খেলা?