চুরি হয়ে যাচ্ছে আস্ত একটা নদী! রাস্তায় নামলেন এলাকাবাসী

চুরি হয়ে যাচ্ছে জামুরিয়ার সিঙ্গারণ নদী। দূষিত সিঙ্গারণের জলের এখন রঙ লাল । এরই প্রতিবাদে আজ সিঙ্গারন নদী বাঁচাও কমিটির গণ কনভেনশন তফসি রেলওয়েট সংলগ্ন ময়দানে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন উপস্থিত হয়েছিলেন এই গণ কনভেনশনে।

New Update
singaran river.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা: জামুড়িয়ায় একসময় সিঙ্গারণ নামেই ছিল কোলিয়ারি। সিঙ্গারণ নদীর অস্তিত্ব থাকলেও সেই নদীর গতি নেই বললেই চলে। নদীর জল এখন লাল। জামুড়িয়ার ইকড়া, শেখপুর, মামুদপুর চৌকি ডাঙ্গা ,ভূত বাংলা, জানবাজার ,ধসল, তপসি গ্রাম লাগোয়া এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া সিঙ্গারণ নদী দূষিত হয়ে পড়েছে কারখানার বর্জ্য পদার্থের জন্য বলে অভিযোগ। সিঙ্গারণ নদী বাঁচাও কমিটির অন্যতম সদস্য অজিত কোডার। অজিত বাবু জানান, জামুড়িয়ার ইকড়া শিল্পতালুকে স্পঞ্জ আয়রন কারখানাগুলির বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ। জামুড়িয়ায় সিঙ্গারন নদীর পাড়ে রয়েছে ১৪ টি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, কারখানার দূষিত জিনিসপত্র জলে মেশায় এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আগে বর্জ্য মেশার ফলে নদীর জল কালো হয়ে যেত। কিন্তু এখন তা লাল হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় জল কমিশনের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে সারা রাজ্যের মধ্যে আসানসোলে সবচেয়ে দ্রুত জল স্তর নীচে নেমে যাচ্ছে। অথচ দিন দিন খনি শিল্পাঞ্চলের প্রাচীনতম সিঙ্গারণ নদী চুরি হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জলাশয় এবং নদী সংরক্ষণ না করতে পারলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সিঙ্গারণ নদীকে বাঁচাতে কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই বলেই অভিযোগ শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দাদের।

২০০ ফুট চওড়া ছিল সিঙ্গারণ নদী। গত চার দশকে অবশ্য তা কমে ১০-১২ ফুটে নেমে এসেছে। কোথাও হয়তো সেটা আরও কম। একাধিক কারখানার পক্ষ থেকে এই নদীর পাড় দখলের লড়াইও আছে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাটি ফেলে নদীর জল আটকে সেই জল কারখানাতে ব্যবহার হচ্ছে। আবার কারখানার দূষিত বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। এমনকী নদীর গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

বাম আমলেও কেউ কোনও উদ্যোগ নেননি। বর্তমান সময়েও একই অবস্থা। সিঙ্গারণ নদীর ধারে অবস্থিত জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, অন্ডাল এলাকার হাজার হাজার মানুষ এই নদীর উপর নির্ভরশীল। সেই নদী আজ লুপ্তপ্রায়। আগে এই নদীর নাম স্থানীয় মানুষের মুখে মুখে ফিরত। এখন অনেকেই নদীকে ভুলতে বসেছেন। জামুরিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইন্দ্রা বাদ্যকর  জানান বিষয়টা তার নজরে এসেছে। তিনি অভিযোগ পেয়েছেন।  দ্রুত এই বিষয় নিয়ে কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।