রাত নামলেই হানা এক দাঁতালের! চার রাতেই গুঁড়িয়ে দিল ২৩টি বাড়ি—ঘুম উড়েছে বনদপ্তরের!

একটা বুনো হাতির তাণ্ডবে ২৩টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
WhatsApp Image 2025-06-19 at 7.08.05 PM (1)

নিজস্ব সংবাদদাতা: রাত নামলেই ভয়ংকর আতঙ্ক নেমে আসছে মেদিনীপুরের গ্রামগুলিতে। এক দলছুট দাঁতাল হাতির দাপটে চার দিনের মধ্যে ভেঙে পড়েছে মোট ২৩টি বাড়ি। মানুষ ঘরে থেকেও নিরাপদ নয়। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের লোকজন। ঘুম ছুটেছে বনদপ্তরেরও।

বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর বনবিভাগের অধীনস্থ পিড়াকাটা ও চাঁদড়া রেঞ্জ এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি দাঁতাল হাতি। কোনও ঝাঁকে নয়, সে একাই ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং প্রতিদিন রাত হলেই গ্রামে ঢুকে পড়ছে। তার চলার পথে পড়ে থাকা বাড়িগুলির দেওয়াল, দরজা, জানালা কিছুই ছাড়ছে না। শুঁড় দিয়ে একের পর এক বাড়ির অংশ ভেঙে দিচ্ছে।

বুধবার গভীর রাতে পিড়াকাটা রেঞ্জের বড় কলসিভাঙ্গা ও পাথরি এলাকায় ওই দাঁতাল ১১টি বাড়ি ভেঙে ফেলে। বনকর্মীরা সকালবেলায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান। তার আগের তিন রাতে চাঁদড়া রেঞ্জের শিরষী, চাঁদাবিলা, ঝরিয়া ও গোলকচক এলাকায় আরও ১২টি বাড়ি ভেঙে দেয় ওই একই দাঁতাল।

হাতিটির আক্রমণে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন এক ব্যক্তি ও এক বৃদ্ধা। টানা বৃষ্টিতে মাটির তৈরি বাড়ির দেওয়াল আরও নরম হয়ে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। মানুষ ঘরেই গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন, কিন্তু সেই ঘরও এখন আর নিরাপদ নয়।

elephant

অবাক করার বিষয়, হাতিটি কোনও খাবারের খোঁজ না করেই বাড়িগুলি ভাঙছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ঘরে খাবার না থাকা সত্ত্বেও সে দরজা-জানালা ভেঙে দিচ্ছে। চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক লক্ষীকান্ত মাহাত বলেন, ‘‘বুঝে উঠতে পারছি না, খাবার ছাড়াই বাড়িগুলি কেন ভাঙছে।’’

বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাঁতালটি হঠাৎ এত অস্বাভাবিকভাবে কেন আচরণ করছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি এর আগে কোনও দলছুট হাতির এইভাবে লাগাতার বাড়ি ভাঙার নজির নেই। পিড়াকাটা রেঞ্জের আধিকারিক শুভজিৎ দাস বলেন, “এক রাতেই ১১টি বাড়ি ভাঙার ঘটনা সত্যিই অভূতপূর্ব। গ্রামে হাঁটতে হাঁটতেই আশপাশের বাড়ির দিকে আক্রমণ করছে হাতিটি। কোনও খাবারের খোঁজও করেনি।”

বর্তমানে ওই দাঁতালকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বনদপ্তর বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে। গ্রামে হাতির দাপটে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। বনদপ্তরের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—এই হানাদার দাঁতালকে আটকানো।