রাত দুটো তিনটে অবধি পড়াতো, ঘুমাতো দিত না, মারধর করত... সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নির রহস্যমৃত্যুতে সরব গৃহশিক্ষিকা

সঞ্জয় রায়ের নাবালিকা ভাগ্নির রহস্যমৃত্যু ঘিরে এবার সরব বলেন তার গৃহশিক্ষিকা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
minor girk

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভবানীপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সঞ্জনা সিংহের রহস্যমৃত্যু ঘিরে ক্রমেই ঘনাচ্ছে রহস্য। এবার সামনে এল আরও বিস্ফোরক তথ্য— মৃত ছাত্রীর সৎ মা নাকি আরজি কর কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের বোন! বিদ্যাসাগর কলোনির এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তোলপাড় এলাকা। স্থানীয়রা বলছেন, দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হতো ছোট্ট সঞ্জনা।

প্রতিবেশী এবং পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটিকে প্রায়ই বেল্ট দিয়ে মারা হতো। রাতভর জেগে পড়াশোনা করতে বাধ্য করা হতো। বাইরে খেলতে যাওয়া ছিল নিষেধ। সঞ্জনার ঠাকুমা অভিযোগ করেছেন, “আমার নাতনিকে বেল্ট দিয়ে পেটাত। মারধর করত। ওকে রাতে ঘুমোতে দিত না।”

আরও ভয়ঙ্কর চিত্র ফুটে উঠেছে ছাত্রীর গৃহশিক্ষিকার বয়ানে। তিনি জানিয়েছেন, “রাত দু’টো-তিনটে পর্যন্ত ওকে পড়ানো হতো। না পারলে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিত। কখনও ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা পড়ানো হতো। রেজাল্ট খারাপ হলেই ওকে ধরে টানত, মারত। আমি নিজের চোখে দেখেছি— স্যার মারছে, বাবা-মা মারছে। শারীরিক, মানসিক দুই দিকেই অত্যাচার চলত। আমরা বিচার চাই— কে মারল, কীভাবে ও মারা গেল, জানতে চাই।”

hand-dead-victim-woman-covered-600nw-
ফাইল চিত্র

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এটা কোনওভাবেই ‘ন্যাচারাল ডেথ’ নয়। প্রতিবেশীদের একজন বলেন, “আমরা সবাই চাই ওদের কড়া শাস্তি হোক— হয় ফাঁসি, নয়তো যাবজ্জীবন।” আরেকজনের কথায়, “এই বাড়িতে আগেও এক মৃত্যু হয়েছিল। সঞ্জনার জন্মদাত্রী মা-ও কয়েক বছর আগে একইভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলেছিলেন। তখনও অভিযোগ উঠেছিল, কিন্তু কিছুই হয়নি।”

গতকাল বাড়ির আলমারি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় সঞ্জনার দেহ। খবর পেয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ঘিরে ফেলেন বাড়িটি। আজ সকালে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে গোটা বিদ্যাসাগর কলোনি। স্থানীয়রা সঞ্জনার বাবা ও সৎ মায়ের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি— এই মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, এটি ঠাণ্ডা মাথায় খুন।

মেয়েটির মা মারা গিয়েছিলেন একইভাবে— আর এখন মেয়ে। একের পর এক রহস্যমৃত্যুতে আতঙ্কিত ভবানীপুরবাসী। এলাকাবাসীর স্পষ্ট বক্তব্য— “আর নীরব থাকব না, এবার ন্যায়ের দাবি উঠবেই।”