ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া নীতি সত্ত্বেও ভারতের গুরুত্ব আকাশছোঁয়া! আমেরিকার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস

মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি ২০২৫–এ চীনকে ঠেকাতে ভারতের বিশেষ ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
Donald Trump
নিজস্ব সংবাদদাতা:  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বাণিজ্য নিয়ে টানাপোড়েন, পাল্টা শুল্ক, এইচ-১বি ভিসা সমস্যা আর আমেরিকায় বাড়তে থাকা অভিবাসীবিরোধী মনোভাব—সব সত্ত্বেও ভারতকে এবার বড় কৌশলগত মিত্র হিসেবে তুলে ধরল ওয়াশিংটন।
৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি ২০২৫–এ খুব স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব ঠেকাতে ভারতের ভূমিকা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চার দেশের কোয়াড জোট—ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া—এই লড়াইয়ে মূল শক্তি হয়ে উঠবে বলেও জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নানা কড়া অবস্থান থাকা সত্ত্বেও এই রিপোর্ট দেখিয়ে দিয়েছে যে ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক এখন আগের থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের নাম গোটা ২৯ পাতার নথিতে মাত্র একবার এসেছে, সেটিও কোনও কৌশলগত বিষয়ের জন্য নয়, বরং ট্রাম্পের পুরনো দাবি নিয়ে।

modi and trump

রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, আমেরিকাকে ভারত সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে। এতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য বদলানো সম্ভব হবে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসী নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, একটি নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার জন্য ভারত-আমেরিকার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এখন বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জিডিপি উৎপাদন করে। আগামী শতকে এই অঞ্চলই সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্র হয়ে উঠবে। তাই এই অঞ্চলে চীনের দাপট রুখতে প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করা, যৌথ সামরিক মহড়া বাড়ানো এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা গভীর করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
কোয়াডকে আরও কার্যকর করে তোলার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে ওয়াশিংটন। শুধু কূটনীতি নয়, সমুদ্র নিরাপত্তা, সরবরাহ শৃঙ্খল, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, এমনকি ভ্যাকসিন সহযোগিতা—সব ক্ষেত্রে চার দেশকে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চীনের বাড়তে থাকা সামরিক ক্ষমতা ও সমুদ্রবাণিজ্যে তাদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের অর্ধেক বাণিজ্য যেসব সমুদ্রপথে চলে, সেই পথগুলির নিরাপত্তা বজায় রাখতে কোয়াড ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
এই স্ট্র্যাটেজি কার্যকর হলে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আন্তর্জাতিক মহলের মনে করা। ভবিষ্যতে নতুন বাণিজ্য চুক্তি বা যৌথ প্রতিরক্ষা প্রকল্পেরও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।