/anm-bengali/media/media_files/2025/07/28/pakistani-taliban-2025-07-28-19-31-40.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন মহাদেব’-এ কাশ্মীরের হরওয়ানে যখন লস্কর-ই-তইবা প্রশিক্ষিত জঙ্গি হাবিব তাহির ওরফে ‘ছোটু’ খতম হল, তখন প্রথমেই ফোকাস ছিল বড়সড় কৌশলগত জয় নিয়ে। কিন্তু এই ঘটনাকে ঘিরে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) কুইয়ান গ্রামে যা ঘটেছে, তা যে কোনও সীমান্ত পার হওয়া অভিযানের থেকেও বহু গুণ বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
লস্কর ও তাদের শাখা সংগঠন JKUM সাধারণত কোনও জঙ্গি নিকেশ হওয়ার পর তার শেষযাত্রায় নতুন জঙ্গি তৈরি করতে প্রচার চালায়, এবার সেই প্রচেষ্টাই মুখ থুবড়ে পড়ল। কারণ ছোটুর পরিবার স্পষ্ট জানিয়ে দিল, তারা কোনও জঙ্গি সংগঠনকে ছেলের শেষ যাত্রায় আসতে দেবে না।
/filters:format(webp)/anm-bengali/media/media_files/2025/07/28/pahalgam-terrorists-2025-07-28-17-13-05.jpg)
কিন্তু তাতেও দমে যায়নি লস্করের এক স্থানীয় কম্যান্ডার রিজওয়ান হানিফ। সে সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে শেষ যাত্রায় হাজির হয়। শুরু হয় ঝামেলা। অভিযোগ লস্করের ওই কম্যান্ডার বন্দুক উঁচুয়ে জোর করে শেষ যাত্রায় অংশ নিতে চায়। জনতা একজোট হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, বাধা দেয় এবং শেষপর্যন্ত অস্ত্রধারী রিজওয়ানকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
POK-তে যেখানে এতদিন ভয় আর চুপ করে থাকার রীতি ছিল, সেখানে এ ঘটনা যেন এক অঘোষিত বিদ্রোহ। এতদিনের নীরবতা এবার গর্জনে বদলে গেল।
ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। কুইয়ান ও খায়ালা গ্রামের মানুষজন এবার এগিয়ে এসেছে আরও বড় সিদ্ধান্ত নিতে। তাঁরা মিলিতভাবে ‘জিগরা’ নামে এক ঐতিহ্যবাহী জনসমাবেশ ডাকছেন— যেখানে একত্রে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এবং জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ রুখতে তারা শপথ নেবেন।
POK-তে যেখানে জিহাদি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে টুঁ শব্দ করাও বিপজ্জনক, সেখানে এমন প্রকাশ্য প্রতিবাদ যেন নজিরবিহীন।
এই প্রতিরোধ কোনও রাজনৈতিক দল বা রাষ্ট্রের ছায়াতলে নয়—এটা দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় জর্জরিত সাধারণ মানুষের ক্লান্তির ফল। বছরের পর বছর ধরে একের পর এক তরুণ ছেলেকে সন্ত্রাসে পাঠিয়ে দেওয়ার পর পরিবারগুলো আর চুপ করে থাকতে পারছে না। ছোটুর মৃত্যু এবং শেষযাত্রায় লস্করের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ যেন তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিল।
POK-এর মাটিতে এই প্রতিরোধ শুধু এক জনাজা কিংবা জিগরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটা এক পরিবর্তনের সূচনা, যেখানে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সন্ত্রাসের কাছ থেকে। আর এটাই ভারতীয় সেনার কৌশলগত সাফল্যের থেকেও বড় সামাজিক জয়।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us