ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা? পাকিস্তানে তীব্র রাজনৈতিক ঝড়, সেনা–সরকার একসুরে প্রস্তুতি!

ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও PTI নিষিদ্ধ করার বিষয়ে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর আলোচনা তীব্র হচ্ছে। সন্ত্রাস বৃদ্ধি, কূটনৈতিক ক্ষতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগে ইমরানের ওপর কঠোর পদক্ষেপের সম্ভাবনা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
Imran khan

নিজস্ব সংবাদদাতা:  পাকিস্তানে ফের বড় রাজনৈতিক অস্থিরতার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হবে কি না, তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে সরকারি মহল ও সেনা নেতৃত্বের মধ্যে। একই সঙ্গে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ (PTI)–কে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে সরকারঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি।

সরকার এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের আশঙ্কা, ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পাকিস্তানের কৌশলগত সম্পদ, পরমাণু প্রকল্পসহ বহু সংবেদনশীল রাষ্ট্রীয় তথ্য জেনেছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক অবাধ্যতা, সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লাগাতার সংঘর্ষমুখী অবস্থান এবং রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান—সব মিলিয়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন শেহবাজ শরিফ সরকার ও সেনা নেতৃত্ব। এ কারণেই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কথা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

imran khan1.jpg

ইমরানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি নাকি তেহরিক-এ-তালিবান পাকিস্তান (TTP) এবং আফগান তালিবানের প্রতি অতিরিক্ত সহানুভূতিশীল ছিলেন। সূত্রের মতে, তাঁর সরকারের আমলে TTP-র জঙ্গিদের দেশে ফিরিয়ে আনার যে নীতি নেওয়া হয়েছিল, তার ফলেই পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ আজ ভয়াবহভাবে বেড়েছে। সন্ত্রাসের হার নাকি ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ছে, এবং বহু সেনা ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। এসবই তাঁর বিরুদ্ধে মামলার অন্যতম প্রধান ভিত্তি হতে পারে বলে সরকারি দাবি।

এছাড়াও বড় মাথাব্যথার কারণ কূটনৈতিক সম্পর্ক। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, ইমরানের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং সৌদি আরব—পাকিস্তানের তিন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র—যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েছিল। আমেরিকা নাকি তাঁর ‘সাইফার’ অভিযোগে রেগে যায়, যেখানে তিনি বলেছিলেন, ওয়াশিংটন তাঁর সরকার পতনে ভূমিকা নিয়েছে। আবার CPEC প্রকল্পে ‘চিনের বিনিয়োগকারীরা দুর্নীতিগ্রস্ত’—এই দাবি বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে। সৌদি আরবের কাছ থেকে অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তা দাবি করা এবং রিয়াধের নেতৃত্ব সম্পর্কে কড়া মন্তব্য করায় সৌদিও ক্ষুব্ধ হয়। সরকারি মহলের দাবি, এসব কূটনৈতিক ভুল পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক অবস্থান দুর্বল করেছে।

এই সব কারণ মিলিয়ে ইমরান খানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আভাস মিলছে। অনেকের মতে, পাকিস্তানি রাজনীতিতে এটা হতে পারে গত দশকের সবচেয়ে বড় ঝড়।