মালিতে পাঁচ ভারতীয় অপহৃত! আল-কায়েদা-ঘনিষ্ঠ জঙ্গিদের ছায়া ঘনাচ্ছে আফ্রিকায়

পশ্চিম আফ্রিকার মালি থেকে চাঞ্চল্যকর খবর! স্থানীয় বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করা পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে অপহরণ করেছে একদল সশস্ত্র জঙ্গি। আল-কায়েদা ও আইএসআইএস-ঘনিষ্ঠ জঙ্গি সংগঠনগুলির দাপটে অস্থির দেশটিতে ফের বিদেশি অপহরণের ঘটনা, আতঙ্কে ভারতীয় মহল।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
breaking new 2

নিজস্ব সংবাদদাতা:  আবারও বিদেশ মাটিতে বিপদে ভারতীয়রা। আফ্রিকার পশ্চিমে মালি থেকে পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে অপহরণ করেছে একদল সশস্ত্র জঙ্গি। সরকারি সূত্রে শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মালি-র পশ্চিমাঞ্চলের কোব্রি নামের একটি এলাকা থেকে তাঁদের তুলে নিয়ে যায় বন্দুকবাজরা। এই ভারতীয়রা স্থানীয় একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন। অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাকি ভারতীয় কর্মীদের দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজধানী বামাকোতে।

ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, “আমরা পাঁচ ভারতীয় নাগরিকের অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করছি। বাকি কর্মীরা এখন নিরাপদে রয়েছেন।” তবে এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি সংগঠন অপহরণের দায় স্বীকার করেনি। কিন্তু গোয়েন্দা সূত্রের আশঙ্কা, আল-কায়েদা ও আইএসআইএস-ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির হাতই থাকতে পারে এর পেছনে।

mali

মালি দীর্ঘদিন ধরেই অস্থিতিশীল। ২০১২ সালের তুয়ারেগ বিদ্রোহের পর থেকেই দেশটিতে লাগাতার গৃহযুদ্ধ ও সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে। বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা সামরিক জান্তা দেশের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ক্রমে শক্তি বাড়িয়েছে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাত নসরাত আল-ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন’ বা জেএনআইএম, যা আল-কায়েদার সহযোগী গোষ্ঠী। সম্প্রতি তারা মালিতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে, ফলে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট।

এই প্রথম নয়—গত সেপ্টেম্বরে একই সংগঠনের জঙ্গিরা রাজধানী বামাকোর কাছ থেকে দুই এমিরাতি নাগরিক ও এক ইরানি নাগরিককে অপহরণ করেছিল। তাঁরা মুক্তি পান কয়েক সপ্তাহ আগে, প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দেওয়ার পর।

মালির বর্তমান সামরিক শাসক আসিমি গোইতা ক্ষমতায় এসেছিলেন সন্ত্রাস দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু ফ্রান্স ও আমেরিকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন করে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকলেও তেমন সফলতা আসেনি। দেশের বহু অংশ এখন কার্যত জঙ্গিদের দখলে। তারা শাসন চালাচ্ছে নিজেদের মতো, যেখানে মেয়েদের হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, এবং সাধারণ মানুষের যাতায়াতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যদি জেএনআইএম ক্রমে দক্ষিণে অগ্রসর হয়, তবে রাজধানী বামাকোও নিরাপদ থাকবে না। এই অপহরণের ঘটনাটি সেই আশঙ্কাকেই আরও জোরালো করে তুলেছে। ভারতীয় দূতাবাস ইতিমধ্যেই মালির প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে, অপহৃত নাগরিকদের দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানানো হয়েছে।