যেখানে সূর্যাস্ত দেখছিলেন মানুষ, সেখানেই ঝুলছিলেন নাবিকরা—ব্রুকলিন ব্রিজে বিভীষিকার রাত

ব্রুকলিন ব্রিজের দুর্ঘটনার কথা মনে করে আতঙ্কে কেঁপে উঠছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
brooklyn bridge

নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার এক ভয়ঙ্কর দৃশ্যের সাক্ষী হল ব্রুকলিন ব্রিজ। মেক্সিকান নৌবাহিনীর ১৪৭ ফুট লম্বা প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘কুয়াউতেমোক’ (Cuauhtémoc) ব্রিজের নিচ দিয়ে পার হওয়ার সময় ধাক্কা খায় সেতুর আর্চে। সেই ধাক্কায় ভেঙে পড়ে মস্তুল। ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ১৯ জন। সেই সময় জাহাজে  ২৭৭ জন যাত্রী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাবিকরা মস্তুলের দড়িতে ঝুলছিলেন জীবন বাঁচানোর আশায়। চিৎকার, কান্না, আতঙ্কে ভরে গিয়েছিল পুরো এলাকা।

চোখের সামনে ঘটনাটি ঘটতে দেখেন সিডনি নিডেল ও লিলি ক্যাটজ। তাঁরা জানান, সূর্যাস্ত দেখছিলেন, তখনই বিশাল জাহাজটি ব্রিজে ধাক্কা খায় এবং মস্তুলটি ‘বড় ডালের মতো’ ভেঙে পড়ে। ক্যাটজ বলেন, “আমরা দেখি একজন ওপরে দড়িতে ঝুলছে, প্রথমে চোখে ধাঁধা লেগেছিল। পরে ফোনে জুম করে দেখি, সে অন্তত ১৫ মিনিট ওভাবে ঝুলে ছিল, এরপর কেউ তাকে উদ্ধার করে।”

brooklyn bridge accident

অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী নিক করসো বলেন, “মস্তুল ভাঙার শব্দ ছিল যেন কোনো বড় ডাল ভেঙে যাওয়ার শব্দ। আমি ভাবছিলাম, এটা কি কোনো সিনেমা চলছে?”

৪৩ বছরের ইসমারি রোমেরো বলেন, “আমরা সবাই জাহাজকে বিদায় জানাতে এসেছিলাম, আনন্দের মুহূর্ত ছিল। হঠাৎই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ চিৎকার করছিল, কাঁদছিল, কেউ ভাবতেই পারেনি এমন কিছু ঘটবে।”

ঘটনার সময় পার্কে ছিলেন ৩৩ বছরের ফটোগ্রাফার আয়া আসান। তিনি বলেন, “আমি ভাবছিলাম, হয়তো জাহাজটা সরাসরি পার্কে এসে ধাক্কা দেবে। আমি দৌড়াতে শুরু করি, বাকিরাও পালাতে শুরু করে। এরপর পুলিশ আসে, সাইরেন বাজে, মানুষকে ঝুলে থাকতে দেখি।”

জানা যায়, নৌবাহিনীর এই প্রশিক্ষণ জাহাজটি ব্রিজের উচ্চতা মেপে পার হওয়ার অনুমতি ছাড়াই ঢুকে পড়েছিল সেতুর নিচে। এখন প্রশ্ন উঠছে — এমন মারাত্মক ভুল কীভাবে ঘটলো? কীভাবে এত বড় জাহাজ ব্রিজের উচ্চতা না মেপে পাঠানো হলো? দায় কার?