রাস্তায় ২৩১ গাছ, আকাশে বাতিল ৪০০ ফ্লাইট— সাও পাওলোতে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ১৩ লক্ষ মানুষ

ঝড়ের তাণ্ডবে সাও পাওলোয় বিদ্যুৎহীন ১৩ লক্ষ মানুষ, রাস্তায় শত শত গাছ, বাতিল ৪০০ ফ্লাইট। মেয়রের ক্ষোভ, জল পরিষেবাও বিপর্যস্ত।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
breaking new 2

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভয়াবহ ঝোড়ো হাওয়ার ধাক্কায় ব্রাজিলের সাও পাওলোয় এখনও পর্যন্ত ১৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন। বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল দমকা হাওয়ায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ-পরিষেবা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি খুব একটা বদল হয়নি।

বিদ্যুৎ পরিষেবা সংস্থা এনেল জানিয়েছে, তাদের ২২ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ১২ লক্ষের পরিষেবা ফেরানো গেলেও আরও প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ বৃহস্পতিবার সারাদিনই অন্ধকারে ছিলেন। ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস শহরে আছড়ে পড়ায় বহু জায়গায় পুরো গ্রিড নতুন করে তৈরি করতে হচ্ছে, তাই মেরামতেও দেরি হচ্ছে বলে সংস্থার দাবি। হাসপাতাল ও জরুরি পরিষেবার জন্য জেনারেটর দেওয়ার কথাও জানিয়েছে এনেল।

sao paolo

সাও পাওলো শহর প্রশাসন জানিয়েছে, এই ঝোড়ো হাওয়া আসলে দক্ষিণ ব্রাজিলে তৈরি হওয়া এক্সট্রাট্রপিক্যাল সাইক্লোনের প্রভাব। এখন পর্যন্ত ২৩১টি গাছ ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত বিমান পরিষেবাও—এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। শহরের কঙ্গনহাস বিমানবন্দর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গুয়ারুলহোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত।

মেয়র রিকার্ডো নুনেস বিদ্যুৎ সংস্থাকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেছেন, সংস্থা দায়িত্ব পালন করছে না। তাঁর অভিযোগ, “প্রতি বারই একই ঘটনা। সামান্য ঝড়ে শহর অন্ধকারে ডুবে যায়। এনেল পুরোপুরি দায়িত্বজ্ঞানহীন।” বুধবার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ ছিল—তখন ২০ লক্ষের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন ছিলেন।

এদিকে জলের সংস্থা সাবেস্প জানিয়েছে, বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের পাম্পও ঠিকমতো কাজ করছে না। ফলে জল পরিষেবাতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যুৎহীন শহরের বাসিন্দারা কাজের জন্য ঠাঁই নিয়েছেন শপিং মল ও ক্যাফেগুলিতে। ভিলা মাডালেনা এলাকার মনোবিদ থাইজা ফের্নান্দেজ বলেন, “বারবার সময় দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখা হচ্ছে না। এ বছরই তিনবার এমন অভিজ্ঞতা হল। কারও ওপরই ভরসা রাখা যায় না।”

বিমানবন্দরে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন সারাদিন ধরে দেখা গেছে। অনেকেই জানেন না তাঁদের ফ্লাইট আদৌ উড়বে কি না। এতে গোটা ব্রাজিলের ফ্লাইট নেটওয়ার্কেই প্রভাব পড়ছে।