নতুন করে উদ্বেগ! সীমান্তে হাজির ৩০০ জন শরণার্থী

ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে ৩০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী হাজির হয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাঁদের একটি অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন।

author-image
Tamalika Chakraborty
আপডেট করা হয়েছে
New Update
rohigya.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে ৩০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হাজির হয়েছেন। তাঁরা কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ থেকে নৌকায় পাড়ি দিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে। আতঙ্কিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা জানান, তাঁদের নৌকায় খাবার ও পানীয় জল শেষ হয়ে গিয়েছিল। মৃত্যু ভয় পেতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। 

৩৪ বছরের শাহিদুল ইসলাম ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে নৌকা থেকে নামার পর বলেন, 'এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, যখন নৌকা ডুবে যাচ্ছিল। নৌকায় কোনও খাবার বা জল অবশিষ্ট ছিল না। আমরা যে বেঁচে এখানে আসতে পারব, তা ভাবতেই পারিনি।' রবিবার সকালে প্রথমে ১৮০ জন জন শরণার্থীকে নিয়ে একটি নৌকা ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে এসে পৌঁছায়। পরের নৌকা রবিবার বিকেলের দিকে ১৩৭ জন শরণার্থীকে নিয়ে আচেহ প্রদেশের উপকূলে আসে। একসঙ্গে তিনটি নৌকা বাংলাদেশের উপকূল থেকে রওনা দিয়েছিল। তৃতীয় নৌকাটির এখনও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে। 

আচেহ প্রদেশের উপকূলে শরণার্থীদের আশ্রয় কেন্দ্র থেকে এক রোহিঙ্গা বলেন, 'আমরা শুধু একটু নিরাপদ আশ্রয় চাই। এর বাইরে আমাদের কিছু আর চাওয়া নেই। আমরা যখন বাংলাদেশ থেকে নৌকায় উঠি, তখন আমরা জানতাম, মাঝ রাস্তায় আমাদের মৃত্যু হতে পারে। তারপরেও আমরা নৌকায় উঠেছি। আমরা সন্তানদের শুধু একটা নিরাপদ আশ্রয় দিতে চেয়েছি।' রবিবার রাতে আচেহ প্রদেশের ভারপ্রাপ্ত রিজেন্ট মুহাম্মদ ইসওয়ান্তো বলেন,'রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শরণার্থীদের অস্থায়ী একটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।'

প্রসঙ্গত প্রায় ১০ লক্ষের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছেন। ২০১৭ সালে মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচায় বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। সেই সময় রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে তখন থেকে রোহিঙ্গারা অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই প্রায়শই রোহিঙ্গা দীর্ঘ সমুদ্র যাত্রা ঝুঁকি নিয়ে ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়ার দিকে রওনা ক্ষেত্রে। অনেকক্ষেত্রে নৌকাডুবির মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সেখানে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু হয়। 

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে গত মাসেই প্রায় ১,৫০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন। নতুন করে শরণার্থী সংখ্যা বাড়ায় ইন্দোনেশিয়া প্রশাসন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই আশ্রয়কেন্দ্রে উপযুক্ত আর্থিক পরিকাঠামো নয়। এখানে খাবার ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র আকাল। এখানে আশ্রয় নিয়ে রোহিঙ্গারা আরও নিজেদের বিপদের মুখে ঠেলে দিলেন।