ডিনারে যাওয়ার কথা বলেছিল! দিল্লি বিস্ফোরণে মুহূর্তে থেমে গেল তরুণ ব্যবসায়ীর জীবন

লালকেল্লা বিস্ফোরণে মৃত চাঁদনি চক-এর ব্যবসায়ী অমর কাটারিয়া। হাতে লেখা ট্যাটু দেখে শনাক্ত করল পরিবার। মা-বাবা, স্ত্রী ও তিন বছরের সন্তানের অমোঘ শোক।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
delhi blast victims

নিজস্ব সংবাদদাতা: দিল্লির লালকেল্লার সামনে সোমবার সন্ধ্যায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে যেভাবে জীবন থেমে গেল অন্তত ১০ জনের, তাঁদেরই একজন ছিলেন চাঁদনি চক-এর তরুণ ব্যবসায়ী অমর কাটারিয়া। বয়স মাত্র ৩৪। বাড়ি ফিরতে পারেননি তিনি, ফিরেছে শুধু তাঁর ট্যাটুতে খোদাই করা ভালোবাসার গল্প।

ভোরবেলা হাসপাতাল থেকে ফোন আসে অমরের বাবা জগদীশ কাটারিয়ার কাছে। ও প্রান্ত থেকে এক কণ্ঠ জানায়, “একটি দেহ আছে, হাতে ট্যাটু লেখা — ‘Mom my first love’, ‘Dad my strength’, আর এক হাতে লেখা ‘Kriti’। আপনার পরিবারের কেউ?”
কাঁপা গলায় জগদীশবাবুর উত্তর — “হ্যাঁ, সে-ই আমার ছেলে অমর।”

delhi blastaaa

এই এক ফোনেই ভেঙে গেল কাটারিয়া পরিবারের সুখের দুনিয়া। সকাল হতেই ছেলের দেহ দেখতে হাসপাতালে ছুটলেন বাবা-মা, বোন ও স্ত্রী কৃতি। যে ছেলে কয়েক ঘণ্টা আগেও ডিনারে যাওয়ার কথা বলেছিল, সেই ছেলেই এখন নিথর, শীতল মেঝেতে পড়ে।

অমর ছিলেন এক উদ্যমী তরুণ উদ্যোক্তা। চাঁদনি চক এলাকায় তাঁর ফার্মাসিউটিক্যাল ব্যবসা ছিল, পাশাপাশি বাইক চালানো ও ঘুরে বেড়ানো ছিল তাঁর নেশা। চার বছর আগে বিয়ে হয়েছিল কৃতির সঙ্গে। তাঁদের তিন বছরের একটি ছেলে আছে। সোমবার রাতে বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ডিনারে বেরোনোর পরিকল্পনা ছিল তাঁর। বাবা জগদীশ কাটারিয়া জানান, “ছেলে ফোনে বলেছিল, ‘বাবা, তুমি আমার পথে আসলে তুলে নেবে, একসঙ্গে যাব।’”
কিন্তু সেই দেখা আর হল না।

রাতভর অমরকে খুঁজে বেড়িয়েছে তাঁর পরিবার। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি, পুলিশ ব্যারিকেড, ভিআইপি আগমন — সবের মাঝেই তাঁদের অসহায় প্রতীক্ষা। অবশেষে রাত চারটে নাগাদ তারা পেল এক অচেনা নীরবতা— যেটা আর কখনও ভাঙবে না।

অমরের দেহে বড় কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না, শুধু গলার পেছনে একটি গভীর ক্ষতচিহ্ন।
বন্ধুরা জানাচ্ছেন, “অমর মানে হাসি। সে যেখানে থাকত, সেখানে আনন্দ থাকত। সে ছিল প্রতিটি আসরের প্রাণ।”

আজ সেই হাসি নেই, কিন্তু ট্যাটুতে লেখা ভালোবাসা আজ দেশের মানুষকে কাঁদাচ্ছে — “Mom my first love, Dad my strength…”