দেশের কেউই বিশ্বাস করে না, দুর্ঘটনার জন্য আপনার ছেলে দায়ী — সুপ্রিম কোর্টে পাইলটের বাবাকে আশ্বাস

আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় প্রয়াত পাইলট সুমিত সবরওয়ালের বাবাকে আশ্বস্ত করল সুপ্রিম কোর্ট। বলল— “দেশের কেউই বিশ্বাস করে না, দুর্ঘটনার জন্য আপনার ছেলে দায়ী।” পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি উঠল আদালতে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
air india pilot

নিজস্ব সংবাদদাতা:  আকাশপথের ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার পরেও ন্যায়বিচারের আশা ছাড়েননি এক বৃদ্ধ পিতা। ৯১ বছরের পুষ্কর সবরওয়াল, যিনি জুন মাসে আহমেদাবাদে ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট, প্রয়াত ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়ালের বাবা। শুক্রবার তাঁর করা আবেদন শুনে দেশের শীর্ষ আদালত জানাল— “কেউই বিশ্বাস করে না যে এই দুর্ঘটনার জন্য আপনার ছেলে দায়ী।”

ঘটনাটি ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়, মৃত্যু হয় ২৬০ জনের। দুর্ঘটনার পরই দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে পাইলট ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়ালের পরিবারের কাছে শুরু হয় এক নতুন লড়াই— ছেলের সম্মান বাঁচানোর যুদ্ধ।

শুক্রবার বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালতে উপস্থিত ছিলেন পুষ্কর সবরওয়াল। তাঁর হয়ে সিনিয়র অ্যাডভোকেট গোপাল শংকরনারায়ণ যুক্তি দেন যে, সরকার এখন পর্যন্ত কেবল Aircraft (Investigation of Accidents and Incidents) Rules-এর Rule 9 অনুযায়ী প্রাথমিক তদন্ত করেছে, কিন্তু এমন এক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে Rule 11 অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ, স্বাধীন তদন্ত প্রয়োজন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, Wall Street Journal-এর একটি প্রতিবেদনে অজ্ঞাতনামা ভারতীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এই দুর্ঘটনাকে “পাইলটের ভুল” হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সত্য নয় এবং মৃত পাইলটের সুনাম নষ্ট করছে।

air india flight

এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বাগচি বলেন, “যদি সংবাদপত্রে এমন অভিযোগ থাকে, তাহলে মামলা হওয়া উচিত ওই পত্রিকার বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে নয়। আদালতের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে জবাবদিহি করানোর সঠিক পথ এটি নয়।”

তবে দুই বিচারপতিই পাইলটের পিতাকে আশ্বস্ত করেন। বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, “এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আপনি এই বোঝা বয়ে বেড়াবেন না যে, আপনার ছেলেকে কেউ দোষ দিচ্ছে। কেউই তাঁকে দায়ী করছে না।”

বিচারপতি বাগচিও মন্তব্য করেন, “তদন্তে এখন পর্যন্ত কোনও জায়গায় পাইলটের বিরুদ্ধে ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে শুধু দুই পাইলটের কথোপকথনের রেকর্ড আছে, কিন্তু দোষারোপ করা হয়নি।”

এই মন্তব্যের পর আদালতে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। ৯১ বছরের বৃদ্ধ পিতার মুখে তৃপ্তির ছাপ— ছেলের নাম যেন অবশেষে মুক্তি পেল অভিযোগের বোঝা থেকে।