মধ্যরাতের সেই ভয়ঙ্কর শব্দ! শ্রীনগরে থানায় বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল এলাকা, দেহাংশ ছিটকে পড়ল ৩০০ ফুট দূরে

শ্রীনগরের নওগাম থানায় বিস্ফোরণে অন্তত ৯ জন নিহত ও ৩০-এর বেশি আহত। ভবন ধসে পড়ে, দেহের অংশ ছিটকে যায় দূর পর্যন্ত। তদন্তে দুর্ঘটনা বলছে পুলিশ।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
srinagar blast


নিজস্ব সংবাদদাতা: শ্রীনগরের নওগাম থানায় শুক্রবার গভীর রাতে ঘটে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। হঠাৎই একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণে সম্পূর্ণ কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। মুহূর্তের মধ্যে থানার পুরো ভবনটি ধসে পড়ে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। আগুনে পুড়ে যায় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গাড়িও। ভয়ংকর সেই বিস্ফোরণের দৃশ্য ধরা পড়ে সিসিটিভি ফুটেজে, যেখানে দেখা যায় আগুনের গোলা ও কালো ধোঁয়া থানার ওপর থেকে আকাশে উঠে যাচ্ছে। স্থানীয়রা আতঙ্কে ছুটে বেরিয়ে আসেন ঘর থেকে।

সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত অন্তত নয় জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের পর থেকেই একাধিক মানুষকে নিখোঁজ বলে অভিযোগ উঠেছে। উদ্ধারকর্মীরা বিধ্বস্ত থানার ভেতর ও আশপাশে এখনও তল্লাশি চালাচ্ছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতায় কিছু দেহের অংশ ৩০০ ফুট দূর পর্যন্ত ছিটকে গিয়েছে। দৃশ্যটি দেখেই বোঝা গিয়েছে বিস্ফোরণের শক্তি কতটা ভয়ঙ্কর ছিল।

ঘটনার সময় থানায় ফারিদাবাদ টেরর মডিউল মামলায় উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পরীক্ষার কাজ চলছিল। সেগুলোর সিল ও হ্যান্ডলিং করা হচ্ছিল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে। পুলিশ জানিয়েছে, সেই সংবেদনশীল বিস্ফোরক সামগ্রী নিয়েই কাজ চলার সময় আকস্মিকভাবে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে ঠিক কোন অংশ থেকে আগুন বা বিস্ফোরণ শুরু হল, তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

dead

এদিকে এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মহম্মদের ছায়া সংগঠন পিএএফএফ। তারা দাবি করেছে এটি ‘অপারেশন’ ছিল। তবে জঙ্গি সংগঠনের এই দাবি একেবারেই খারিজ করে দিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের পুলিশ মহাপরিচালক নলিন প্রভাত। সংবাদমাধ্যমকে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা এবং এর সঙ্গে কোনও হামলা বা পরিকল্পিত বিস্ফোরণের সম্পর্ক নেই। তাঁর ভাষায়, “বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছিল ফারিদাবাদ থেকে। সেগুলি নওগাম থানায় আনা হয় এবং নথিভুক্ত করার সময়েই ঘটনাটি ঘটে। এর বাইরে অন্য কোনও তত্ত্ব ছড়ানো সম্পূর্ণ অযথা।”

এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসকরা তাদের বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে বিস্ফোরণের উৎস, সঠিক পরিস্থিতি ও কোনও মানবিক ত্রুটি ছিল কি না—এসবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এখনও আতঙ্কে, কারণ এমন ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ তারা জীবনে কখনও দেখেননি। পুরো শহরজুড়ে এখনো চরম চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ।