“আইনের বাইরে ক্ষমতা নয়!” শুকনো খেজুর ফেরত আনায় DRI আধিকারিককে ধমক বম্বে হাইকোর্টের

শুকনো খেজুর ফেরত আনায় ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন DRI আধিকারিক।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
bombay high court


নিজস্ব সংবাদদাতা: মহারাষ্ট্রে এক বিরল ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য। দুবাই থেকে আমদানি করা শুকনো খেজুর পাকিস্তান থেকে এসেছে সন্দেহে, তা কাস্টমস কর্তৃক ছাড়পত্র পাওয়ার পরও জোর করে ফিরিয়ে আনেন এক রাজস্ব গোয়েন্দা আধিকারিক (DRI officer)। এই আচরণের জন্যই মঙ্গলবার বম্বে হাইকোর্ট সেই আধিকারিকের ওপর তীব্র ভর্ৎসনা করেন।

বিচারপতি এম. এস. সোনাক ও বিচারপতি অদ্বৈত শেঠনার বেঞ্চে মামলাটি শোনা হয়। মামলাটি দায়ের করেছে ‘মেক ইন্ডিয়া ইমপেক্স’ নামে একটি আমদানিকারক সংস্থা। তাদের অভিযোগ, তারা দুবাই থেকে মোট ৫৬ টন শুকনো খেজুর আমদানি করে, যা সব ধরনের কাগজপত্রসহ বৈধভাবে কাস্টমসের ছাড়পত্র (Customs Clearance) পেয়েছিল। কিন্তু এরপর DRI হঠাৎ করেই সেই পণ্য দু’টি কনটেনার থেকে জোর করে ফিরিয়ে আনে, কারণ তাদের সন্দেহ ছিল—এই খেজুরের ‘পাকিস্তান কানেকশন’ রয়েছে।

arrested a

সংস্থার আইনজীবী সুজয় কান্তাওয়ালা আদালতে জানান, ওই DRI আধিকারিক আইনের কোনো ক্ষমতা ছাড়াই, পরিবহনকারী ও কাস্টমস এজেন্টদের হুমকি দিয়ে পণ্য ফেরাতে বাধ্য করেন। এর ফলে সংস্থার বড়সড় ক্ষতি হয়—তাদের সরবরাহ চুক্তি বাতিল হয় এবং কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

DRI আধিকারিক অবশ্য আদালতে দাবি করেন, তিনি কাউকে হুমকি দেননি, বরং “আবেদন করে” পণ্য ফেরাতে বলেছিলেন। কিন্তু আদালত সেই যুক্তি মেনে নেয়নি।

বিচারপতিদের মন্তব্য— “এই আধিকারিক সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছেন কাস্টমস অ্যাক্টের ৪৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী দেওয়া বৈধ ছাড়পত্রের নির্দেশ। একবার কাস্টমস ছাড়পত্র দেওয়া হয়ে গেলে সেই পণ্য ফেরত আনার কোনও বৈধ ক্ষমতা DRI-র নেই।”

আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, যদি পণ্যের উৎস নিয়ে সত্যিই সন্দেহ থাকে, তবে তা আইনসম্মত তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে, কিন্তু জবরদস্তি পণ্য ফেরানো বেআইনি ও অনুচিত।

এই রায়ের পর বাণিজ্য মহলে আলোড়ন পড়েছে। ব্যবসায়িক সংগঠনগুলির বক্তব্য, এই রায় “বাণিজ্যিক স্বাধীনতা ও আইনসম্মত প্রক্রিয়ার পক্ষে এক বড় বার্তা”। অন্যদিকে DRI সূত্রে জানা গেছে, তারা এখন ঘটনাটির ওপর অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা শুরু করেছে।

বম্বে হাইকোর্টের এই মন্তব্য এখন ভাইরাল—“আইনের বাইরে গিয়ে ক্ষমতা দেখানো যাবে না, সরকারি পদ মানে সীমাহীন অধিকার নয়।”