“যদি ও দোষী না হয়, তবে খুনি কে?”— নিথারি কাণ্ডে বাবার আর্তনাদে কাঁপল নয়ডা

নিথারি কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে খালাস পেলেন সুরেন্দ্র কোলি। মৃত শিশুদের পরিবারের প্রশ্ন— “যদি কোলি দোষী না হয়, পাণ্ডেরও না হয়, তবে খুনি কে?” নয়ডার রাস্তায় শোক আর ক্ষোভ। পড়ুন চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
nithari case ss

নিজস্ব সংবাদদাতা:  নয়ডার নিষ্ঠুর ইতিহাসে আবারও ফিরল নিথারি কাণ্ডের রক্তাক্ত স্মৃতি। ২০০৬ সালে ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ শিশু হত্যা ও নরখাদকতার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সুরেন্দ্র কোলি-কে সোমবার খালাস দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে জানাল — “প্রমাণ যথেষ্ট নয়।”

এই রায়ে একদিকে আইনজীবী মহলে আলোচনার ঝড়, অন্যদিকে নিহত শিশুদের পরিবারে ফের জেগে উঠেছে শোক, ক্ষোভ আর হতাশা।

নয়ডার নিথারি গ্রামের এক নিহত শিশুর বাবা, চোখে জল আর কণ্ঠে রাগ নিয়ে বলেন,“আমরা ভেবেছিলাম অন্তত ন্যায় পাব। পাণ্ডের (মনিন্দর সিংহ পাণ্ডের) খালাসের দিনেই বুক ফেটে গিয়েছিল। আজ শুনলাম কোলিকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যদি কোলি দোষী না হয়, পাণ্ডেরও না হয় — তবে এত বছর জেলে রাখল কারা? যারা ওদের জেলে পাঠিয়েছিল, তাদেরই ফাঁসি দেওয়া উচিত! যদি ওরা অপরাধী না হয়, তবে আমাদের সন্তানদের খুন করল কে?”

২০০৬ সালের নিথারি কাণ্ড ছিল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিভীষিকাময় ঘটনাগুলির একটি। বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছিল একের পর এক শিশুর হাড়গোড় ও শরীরের অংশ। প্রতিবেশী শিশুদের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে যখন গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছিল, তখনই বেরিয়ে আসে এই নৃশংস সত্য।

Supreme court

মনিন্দর সিংহ পাণ্ডের ও তাঁর গৃহকর্মী সুরেন্দ্র কোলি — দু’জনকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কোলির বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা হয়, যার মধ্যে একাধিক মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তদন্ত ও প্রমাণের ফাঁকে অনেক সন্দেহ থেকে গিয়েছে।

শিশুহত্যার শিকার পরিবারগুলি এই রায়ে স্তব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, “যদি কেউ দোষী না হয়, তবে আমাদের সন্তানদের নৃশংস হত্যার বিচার কে দেবে?”

আইনজীবী মহলের মতে, এই মামলাটি আবারও তুলে ধরল ভারতের তদন্ত প্রক্রিয়ার ত্রুটি এবং বিচারের বিলম্বের বেদনাদায়ক চিত্র।