গিরিখাতে স্বামী, মুখে মাস্ক পরে পালাচ্ছে স্ত্রী! ভাইরাল ছবিতে মিলল প্রমাণ

বারাণসী থেকে গাজিপুরে কীভাবে গিয়েছিলেন? সোনমের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তাঁর সহযাত্রী।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
sonam a

নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় এক চমকপ্রদ মোড়! উত্তরপ্রদেশের এক ছাত্রী উজালা যাদব প্রকাশ্যে এনেছেন এমন এক তথ্য, যা মামলার তদন্তে নতুন দিশা দিতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, মূল অভিযুক্ত সোনম রঘুবংশীর সঙ্গে তিনি একই বাসে ভ্রমণ করেছিলেন তার আত্মসমর্পণের কয়েক ঘণ্টা আগে।

ঘটনাটি ৮ জুন রাতের। উজালা, যিনি গাজিপুরের বাসিন্দা, সেই রাতে বারাণসী ক্যান্ট স্টেশনে সোনমকে প্রথম দেখেন। সোনমের মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল এবং তার সঙ্গে ছিল দুই অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষ, যাদের একজন সাদা কাপড়ে মুখ ঢেকে রেখেছিল।

সোনম জিজ্ঞাসা করেন, গাজিপুর বা গোরখপুর যাওয়ার কোনো বাস আছে কি না। উজালা তাঁকে বাসস্ট্যান্ডের দিক দেখিয়ে দেন। পরে দু’জনেই প্ল্যাটফর্ম নম্বর ৭ থেকে একই বাসে ওঠেন। শুরুতে আলাদা বসলেও পরে একজন পুরুষ যাত্রী সিট ছেড়ে দিলে উজালা সোনমের পাশে বসেন।

বাসযাত্রার সময় সোনম ছিলেন ভীষণ অস্থির। মুখ নিচু করে বসেছিলেন এবং মাস্ক পরা ছিল। এক সময় সোনম উজালার ফোন চেয়ে নেন, একটি নম্বর টাইপ করে তা আবার মুছে দেন এবং ফোনটি ফেরত দেন—কোনো ফোন করেননি। পরে জল চেয়ে মুখে ছিটান।

sonam  m

সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর মুহূর্ত আসে যখন উজালা নিজের ফোনে একটি ইনস্টাগ্রাম রিল দেখছিলেন, যেখানে রাজা রঘুবংশীর মা কাঁদতে কাঁদতে বউমার নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। তখন সোনম হঠাৎ বলেন, "এই সব বাজে ভিডিও দেখো না, এগুলো একদম ফালতু।" এরপর উজালা ভিডিওটি বন্ধ করে দেন।

সোনম বারবার জানতে চাইছিলেন, গোরখপুর কত দূরে, যা দেখায় যে সেটাই ছিল তাঁর গন্তব্য। উজালা গাজিপুরে নেমে যান, কিন্তু সোনম বাসে রয়ে যান।

পরের দিন সকালে যখন সংবাদমাধ্যমে সোনমের ধরা পড়ার খবর আসে এবং একটি ধাবার সামনে তাঁর ছবি ভাইরাল হয়, তখন উজালা নিশ্চিত হন — এই মেয়েটি-ই সেদিনের সহযাত্রী। কারণ ধাবার ছবিতেও তাঁর পরনে ছিল একই জামা।

সঙ্গে সঙ্গে উজালা স্থানীয় পুলিশ ও রাজা রঘুবংশীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ভাইরাল বিয়ের কার্ড থেকে একটি ফোন নম্বর খুঁজে পেয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের পুরো ঘটনাটি জানান এবং স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করতে বলেন।

মেঘালয় পুলিশ ইতিমধ্যেই উজালার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ও তাঁর কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছে। উল্লেখ্য, রাজা ও সোনম ১১ মে ইন্দোরে বিয়ে করেন এবং মেঘালয়ে হানিমুনে যান। ২৩ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরে ২ জুন রাজার দেহ পাওয়া যায় একটি গিরিখাতে। সোনম, তাঁর প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এবং আরও তিনজন—বিশাল চৌহান, আনন্দ কুর্মি ও আকাশ রাজপুত—গ্রেপ্তার হন।