১০৪ আক্রান্ত, ২৩ মৃত্যু – কেরালায় ছড়াচ্ছে ‘জলের ভেতরের হত্যাকারী’

কেরালায় মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবায় কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
breaking new 2

নিজস্ব সংবাদদাতা: কেরালা রাজ্যজুড়ে ফের বড় স্বাস্থ্য সংকটের মুখে পড়েছে মানুষ। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাবে, অ্যামিবিক এনসেফালাইটিস বা ‘ব্রেন ফিভার’-এ আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১০৪ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ২৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলার মধ্যে রয়েছে কোল্লাম ও তিরুবনন্তপুরম। এছাড়াও কেরালার কোঝিকোড় ও মালাপ্পুরম জেলা থেকেও হঠাৎ বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ রবিবার ফেসবুকে পোস্ট করে জানান, ২০২৩ সালে কোঝিকোড়ে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর রাজ্যে নির্দেশ জারি হয়েছিল যে এনসেফালাইটিসের সব কেস বাধ্যতামূলকভাবে রিপোর্ট করতে হবে এবং তার কারণ শনাক্ত করতে হবে। সেই অনুযায়ী ২০২৪ সাল থেকে সরকারি ভাবে এনসেফালাইটিসের তথ্য নথিভুক্ত করা শুরু হয়। এই রিপোর্টকৃত কেসগুলির মধ্যে দেখা যায়, এর কিছু অ্যামিবিক এনসেফালাইটিস।

man eatinf Ameoba

মন্ত্রী লিখেছেন, “আজকের রিপোর্টসহ মোট অ্যামিবিক এনসেফালাইটিস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৪। এর মধ্যে ২৩ জন রোগী মারা গেছেন।” তিনি আরও সতর্ক করে জানান, বিশ্বজুড়ে Naegleria fowleri সংক্রমণে মৃত্যুর হার প্রায় ৯৮ শতাংশ, আর Acanthamoeba-এর ক্ষেত্রে তা ৭০ শতাংশেরও বেশি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যামিবিক এনসেফালাইটিস অত্যন্ত বিরল হলেও অত্যন্ত প্রাণঘাতী। এ ধরনের জীবাণু সাধারণত বিভিন্ন জলের উৎসে, বিশেষ করে দূষিত জল ও উষ্ণ জলাশয়ে বাস করে। নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে এটি ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে ছড়ায় এবং প্রায় সব ক্ষেত্রেই মারণ প্রমাণিত হয়। চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন— লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা না করলে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা প্রায় নেই।

কেরালায় এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে। জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে— নদী, পুকুর বা সুইমিং পুলের মতো স্থানে অযথা স্নান না করতে, শরীরে কোনও ক্ষত থাকলে জলাশয়ে প্রবেশ না করতে এবং নাক-মুখ ঢেকে রাখতে। এই ঘটনার পর কেরালায় স্বাস্থ্য-বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়ছে।