“একটিও পরিবার চরম দারিদ্র্যে নেই”—কেরলে ঐতিহাসিক ঘোষণা

কেরল হলো ভারতের প্রথম রাজ্য যেখানে চরম দারিদ্র্য সম্পূর্ণ নির্মূল হয়েছে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ‘কেরল পিরাভি’ উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে এই ঘোষণা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
pinrai bijayan.JPG

নিজস্ব সংবাদদাতা:  ভারতের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লিখল কেরল। রাজ্যটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করল—আর একটিও পরিবার চরম দারিদ্র্যে বাস করছে না। শনিবার কেরল ‘পিরাভি’ বা রাজ্য গঠনের বিশেষ দিনে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বললেন, “আজকের দিনটি ইতিহাসে জায়গা করে নিল। কেরল হলো ভারতের প্রথম রাজ্য যেখানে চরম দারিদ্র্য আর নেই। এটি নয়া কেরল গঠনের আরেকটি মাইলফলক।”

২০২১ সালে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার পর প্রথম বৈঠকেই এই লক্ষ্য স্থির করেছিলেন বিজয়ন। ভোটের আগে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারগুলিকে আলাদা করে চিহ্নিত করে তাদের উন্নয়নের ব্যবস্থা করবেন। সেই পথে এগিয়ে গত দুই বছরে তৈরি হয়েছে হাজার হাজার বাড়ি, সংস্কার করা হয়েছে আরো ৫৫২২টি। জমি দেওয়া হয়েছে ২৭১৩টি গৃহহীন পরিবারকে।

মুখ্যমন্ত্রীর দেয়া পরিসংখ্যান বলছে, ২১ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রথমবার পেয়েছেন রেশন কার্ড, আধার, পেনশন–এর মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি। ৪৩৯৪টি পরিবার পেয়েছে সরাসরি জীবিকা প্রকল্পের সহায়তা। সবচেয়ে বড় কথা—এক ছাঁচে উন্নয়নের বদলে আলাদা আলাদা ৬৪ হাজার ৬টি পরিবারকে নিয়ে তৈরি হয়েছে পৃথক পরিকল্পনা। অর্থাৎ প্রতিটি পরিবারের প্রয়োজন অনুযায়ী ত্রাণ, ঘর, নথি, কাজের ব্যবস্থা—সব করা হয়েছে।

স্থানীয় স্বশাসনমন্ত্রী এম বি রাজেশ বলেন, “এটি রাজনীতির উর্ধে একটি সাফল্য। এলডিএফ–ইউডিএফ—দুই শাসনেই স্থানীয় স্তরে সমন্বয় করে ক্ষুদ্র প্রকল্পে কাজ হয়েছে।”

kerala cm

তবে বিরোধীরা সন্তুষ্ট নয়। অধিবেশন শুরুর পরেই বিরোধী নেতা ভি ডি সথিসান দাবি করলেন, “এটা সম্পূর্ণ প্রতারণা, বিধানসভার নিয়ম লঙ্ঘন।” প্রতিবাদ জানিয়ে বিরোধীরা ওয়াকআউট করে স্লোগান দেন। উত্তরে বিজয়ন বলেন, “যা বলি তা করি। আমরা প্রমাণ করেছি। প্রতারণার অভিযোগ যারা করছে, তারা নিজেদের চরিত্রই দেখাচ্ছে।”

বিতর্ক থাকলেও তথ্যের ভাষা বলছে—কেরল সত্যিই একটি বড় সামাজিক লড়াই জিতে নিল। হাজারো পরিবার আজ নতুন ঘর, নতুন নথি আর নতুন জীবিকার পথে। আরেকটি ‘মডেল কেরল’ গড়ার দাবিতে আবেগঘন ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর— “এটাই নব কেরল।”