দুর্ঘটনা বলছে পুলিশ, হামলার দায় নিল জইশের প্রোক্সি গোষ্ঠী—কোনটা সত্য? কাশ্মীর কাঁপানো বিস্ফোরণ নিয়ে রহস্য ঘনীভূত

শ্রীনগরের নওগাম থানায় বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু ও বহু আহত। পুলিশ বলছে দুর্ঘটনা, জইশ প্রোক্সি দাবি করছে হামলার দায়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণের তত্ত্বে নতুন রহস্য।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
kashmir police station blast

নিজস্ব সংবাদদাতা: কাশ্মীরের শ্রীনগরের নওগাম থানায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণ নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে রহস্য। প্রথমে ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলেই ব্যাখ্যা করেছিল পুলিশ। দাবি করা হয়েছিল, সম্প্রতি ফারিদাবাদের একটি সন্ত্রাস মডিউল থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল বিস্ফোরক সামগ্রী এখানেই রাখা হয়েছিল, এবং সেই বিস্ফোরক সিল করার সময়ই আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে। কিন্তু পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মহম্মদের একটি ছায়া সংগঠন যখন বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল, তখনই পরিস্থিতি ঘোরতর জটিল হয়ে উঠল।

মারণ বিস্ফোরণে নয় জন পুলিশ ও সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০ জনের বেশি। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। থানার পুরো ভবনটি মুহূর্তে ধসে পড়ে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় একাধিক গাড়ি। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, কিছু দেহের অংশ ৩০০ ফুট দূর পর্যন্ত পাওয়া গেছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে, কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেকে আটকে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ।

srinagar blast

জম্মু–কাশ্মীর পুলিশের প্রধান জানিয়েছেন, প্রায় ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থানার ভেতরেই রাখা ছিল। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সেগুলো সিল এবং নিরাপদে সংরক্ষণ করার সময়ই বিপর্যয় ঘটে। তাঁর দাবি, এটি নিছকই একটি ‘অ্যাক্সিডেন্ট’, এর সঙ্গে হামলার কোনও যোগ নেই। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থাগুলি এখনই এই বক্তব্য মানতে রাজি নয়। বরং তারা সমান্তরালভাবে দ্বিতীয় একটি তত্ত্বও খতিয়ে দেখছে।

সন্দেহের তীর এবার ঘুরেছে থানার ভেতরে রাখা একটি জব্দ গাড়ির দিকে। ওই গাড়িটি কয়েকদিন আগে বেআইনি কাজে ব্যবহারের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের ধারণা, গাড়িটির ভেতরে হয়তো আইইডি লাগানো ছিল। বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থলের ধ্বংসাবশেষ দেখে কর্মকর্তাদের মনে হয়েছে, একটির বেশি বিস্ফোরণ হতে পারে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটিই হয়তো ধ্বংসের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই দুই তত্ত্ব—দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত বিস্ফোরণ—নিয়েই এখন চলছে কঠোর তদন্ত। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ঘটনাস্থলের প্রতিটি কোণা থেকে নমুনা সংগ্রহ করছে এবং বিস্ফোরণের সঠিক উৎস অনুসন্ধান করছে। এলাকাজুড়ে এখনও উদ্বেগ, আতঙ্ক এবং জল্পনার শেষ নেই।