গোয়া ক্লাব ট্র্যাজেডির পরে রাতারাতি থাইল্যান্ডে পালালেন দুই ব্যবসায়ী! সিবিআইয়ের নজরে লুথরা ভাইরা

নাইটক্লাব আগুনে ২৫ জনের মৃত্যু হওয়ার পর দিল্লির ব্যবসায়ী লুথরা দুই ভাই দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান। সিবিআই ইন্টারপোলের ব্লু নোটিস জারি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
Luthra brothers

নিজস্ব সংবাদদাতা:  গোয়ার একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ আগুনে ২৫ জনের মৃত্যু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লির দুই ব্যবসায়ী সৌরভ লুথরা এবং গৌরব লুথরা ফুকেটে পালিয়ে যান। এরপরই তাদের ধরতে ইন্টারপোলের ব্লু নোটিস জারি করার জন্য জোরকদমে চেষ্টা চালাচ্ছে সিবিআই। তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, লিয়োঁ-স্থিত ইন্টারপোল সদর দফতরের সঙ্গে টানা যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, যাতে লুথরা ভাইরা অন্য কোনও দেশে পালানোর সুযোগ না পায়।

সিবিআইয়ের গ্লোবাল অপারেশনস সেন্টার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ২০০-র বেশি পলাতক আসামিকে খুঁজে বের করেছে এবং ১৩৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। একই প্রক্রিয়া এখন লুথরা দুই ভাইয়ের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হচ্ছে। ইন্টারপোলের যোগাযোগের দায়িত্ব ভারতে একমাত্র সিবিআইয়ের হাতেই থাকে। ইন্টারপোল মোট সাত ধরনের নোটিস জারি করে—লাল, হলুদ, নীল, কালো, সবুজ, কমলা ও বেগুনি। এর মধ্যে ব্লু নোটিসের উদ্দেশ্য কোনও সন্দেহভাজনের পরিচয়, থাকা-খাওয়ার হদিশ বা অপরাধ তদন্ত সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা। এটি গ্রেপ্তারের অনুরোধ নয়, তবে আন্তর্জাতিকভাবে নজরদারি চালানোর সুবিধা দেয়। অন্যদিকে, রেড নোটিস হলো গ্রেপ্তার ও প্রত্যর্পণের উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক অনুরোধ।

goa night club

থাইল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি ২০১৫ সাল থেকে কার্যকর। ফলে দুই দেশের মধ্যে অপরাধ সংক্রান্ত সহযোগিতা শক্তিশালী। অতীতে বহু অভিযুক্তকে ব্যাংকক থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীরা তাই আশা করছেন, লুথরা ভাইদেরও খুব শিগগিরই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

অফিশিয়াল সূত্রে জানা গেছে, গোয়া আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জোগাড়ের প্রক্রিয়া চলছে এবং তা পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মাধ্যমে থাই কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় বিভিন্ন এজেন্সির সাহায্যে দু’জনের অবস্থান চিহ্নিত করা হচ্ছে। উচ্চপদস্থ অফিসাররা থাই পুলিশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের বিশ্বাস, ফুকেটেই লুকিয়ে থাকা দু’জনকে দ্রুত আটক করা সম্ভব হবে।

গোয়া পুলিশের দাবি, শনিবার গভীর রাতে আগুন লাগার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর, রবিবার ভোর ৫.৩০-এ ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে চড়ে লুথরা ভাইরা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে উড়াল দেন। পুলিশ দিল্লিতে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছনোর আগেই তারা দেশ ছেড়ে চলে যান। সোমবার তদন্তকারী দল নিশ্চিত করে যে দুই ভাই ইতিমধ্যেই থাইল্যান্ড পৌঁছে গেছেন।

শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’ নামে ওই ক্লাবে আগুন লাগে। ৩০০ বর্গমিটার এলাকা পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়। মৃত্যু হয় ২৫ জনের, যাদের মধ্যে ২০ জনই কর্মচারী। বাকি পাঁচজন ছিলেন পর্যটক, তাঁদের মধ্যে চারজন দিল্লির একই পরিবারের সদস্য।

রবিবার সকালে দায়ের হওয়া এফআইআরে লুথরা দুই ভাইসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অমনোযোগ, অসতর্কতা এবং বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থের ভুল ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় দণ্ডনীয় অপরাধ।