বিচারপতি না বিজেপি মুখপাত্র? বম্বে হাই কোর্টের নতুন নিয়োগ ঘিরে মহারাষ্ট্রে তোলপাড়!

বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োজিত হলেন বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র। এই ঘটনায় মহারাষ্ট্র জুড়ে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
bombay-high-court-pti-1554450647

নিজস্ব সংবাদদাতা: বম্বে হাই কোর্টে অ্যাডভোকেট আরতি সাঠের নিয়োগ ঘিরে মহারাষ্ট্রে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তোলপাড়। জানা গেছে, আরতি সাঠে একসময় মহারাষ্ট্র বিজেপির সরকারি মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধী শিবিরে উঠেছে প্রশ্ন—বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা কি এবারও রাজনৈতিক রঙে রঙিন হতে চলেছে?

সুপ্রিম কোর্ট কোলেজিয়াম ২৮ জুলাইয়ের বৈঠকে অজিত ভগবানত্রাও কাদেহংকর, আরতি অরুণ সাঠে ও সুশীল মনোহর ঘোদেস্বরকে বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের অনুমোদন দেয়। কিন্তু আরতি সাঠের নিয়োগের পর বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

এনসিপি (শরদ পওয়ার) নেতা ও বিধায়ক রোহিত পওয়ার তীব্র আপত্তি জানিয়ে মহারাষ্ট্র বিজেপির লেটারহেডে প্রকাশিত একটি চিঠির স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন, যেখানে আরতি সাঠের নাম মুখপাত্র হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। এই পদে থাকার বিষয়টি নিজেও সামাজিক মাধ্যমে স্বীকার করেছিলেন সাঠে।

bombay high court judge

রোহিত পওয়ার এই নিয়োগকে গণতন্ত্রের জন্য “গুরুতর হুমকি” বলে বর্ণনা করেন। তাঁর অভিযোগ—“যে ব্যক্তি শাসক দলের হয়ে জনসমক্ষে কথা বলেন, তাঁকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া গণতন্ত্রের ওপর সবচেয়ে বড় আঘাত।” তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভারতের বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতাকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

পওয়ার প্রশ্ন তোলেন, কেবল বিচারপতির যোগ্যতা থাকলেই কি রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরাসরি বিচারপতি পদে বসানো উচিত? এটা কি বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিণত করার সমান নয়?

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলের প্রাক্তন মুখপাত্রকে বিচারপতি পদে বসানো কি সংবিধানের ক্ষমতার বিভাজন নীতিকে খর্ব করছে না? এর ফলে কি সংবিধানকেই বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে না?

পওয়ারের বক্তব্য, উচ্চ আদালতের বিচারপতি যদি রাজনৈতিক পটভূমি থেকে আসেন এবং ruling party-র পদে থেকেছেন, তাহলে ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক পক্ষপাত ঢুকে পড়বে না—এ গ্যারান্টি কে দেবে? এমনকি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নিয়োগ করাই গোটা বিচারব্যবস্থার ওপর জনআস্থায় প্রশ্ন তুলতে পারে।

তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, আরতি সাঠের আইনজীবী হিসেবে যোগ্যতা নিয়ে তাঁর কোনো আপত্তি নেই; সমস্যা হচ্ছে জনগণের দৃষ্টিতে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতার বিশ্বাস অটুট রাখা।