ভালোবাসা থেকে রক্তাক্ত প্রতিশোধ! দিল্লিতে আগুনে পুড়ে মৃত্যু UPSC পড়ুয়ার, রহস্য ফাঁস পুলিশের

দিল্লির গান্ধী বিহারে আগুনে পুড়ে মৃত্যু UPSC পরীক্ষার্থী রামকেশ মীনার। পুলিশ জানায়, এটি দুর্ঘটনা নয়, খুন। প্রেমিকা অমৃতা চৌহান ও তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ মিলে রামকেশকে হত্যা করে আগুন লাগায়, যাতে দুর্ঘটনার আকার দেওয়া যায়।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
delhi murder

নিজস্ব সংবাদদাতা: দিল্লির গান্ধী বিহারে এক ভয়ঙ্কর খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করল দিল্লি পুলিশ। যে ঘটনাকে প্রথমে সবাই ভেবেছিল একটি দুঃখজনক অগ্নিকাণ্ড, সেটিই আসলে ছিল ভালোবাসা, বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতিশোধে মোড়া এক ঠান্ডা মাথার খুন।

মৃতের নাম রামকেশ মীনা (৩২), যিনি UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। চলতি মাসের শুরুতে উত্তর দিল্লির গান্ধী বিহারের একটি ফ্ল্যাটে তাঁর জ্বলে যাওয়া দেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, ফ্ল্যাটে শর্ট সার্কিট বা এসি বিস্ফোরণে আগুন লেগে দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পুলিশের তদন্তে প্রকাশ্যে আসে এক রোমহর্ষক সত্য।

তদন্তে জানা গেছে, রামকেশকে খুন করেছে তাঁরই লাইভ-ইন পার্টনার অমৃতা চৌহান (২১)। তিনি ফরেনসিক সায়েন্সের ছাত্রী। অমৃতার সঙ্গে এই খুনের ষড়যন্ত্রে যোগ দেয় তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ, যিনি একজন LPG গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর, এবং তাঁদের পরিচিত বন্ধু সন্দীপ কুমার। তিনজনেরই বাড়ি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমৃতা ও সুমিত তাঁদের ফরেনসিক বিজ্ঞান ও গ্যাস মেকানিক্সের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই খুনের ছক কষেছিল। তারা প্রথমে রামকেশকে হত্যা করে, এরপর ফ্ল্যাটে আগুন লাগিয়ে পুরো ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করে। বাইরে থেকে এমনভাবে সেট করা হয়েছিল, যেন এসি বিস্ফোরণে আগুন লেগে মৃত্যু হয়েছে।

dead

তবে ফরেনসিক রিপোর্ট এবং অগ্নিকাণ্ডের প্রাথমিক বিশ্লেষণে পুলিশের সন্দেহ হয়। তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেন, আগুনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এমন একটি অংশ, যেখানে বিস্ফোরণ সম্ভব নয়। এরপরই খুনের দিকেই ঝোঁকে তদন্ত। একে একে উঠে আসে অমৃতা, সুমিত ও সন্দীপের নাম।

পুলিশ জানিয়েছে, অমৃতা ও সুমিতের মধ্যে অতীতের সম্পর্ক নিয়ে রামকেশের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। সেই বিরোধ থেকেই প্রতিশোধের আগুনে খুনের পরিকল্পনা নেয় তারা।

এক পুলিশ অফিসার বলেন, “তারা দু’জনেই তাদের পেশাগত জ্ঞান ব্যবহার করে হত্যার পর প্রমাণ লোপাট করতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানই তাদের ধরিয়ে দিয়েছে।”

বর্তমানে তিন অভিযুক্তই পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে একটি বিকৃত প্রেম ও প্রতিশোধের গল্প, যা দিল্লির নাগরিকদের চমকে দিয়েছে।