দম নিতে পারছে না দিল্লি! দূষণের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া গেটে ধুন্ধুমার বিক্ষোভ, আটক আমআদমি–কংগ্রেস নেতা

দিল্লিতে ভয়ঙ্কর বায়ুদূষণে AQI ছাড়িয়েছে ৪০০। রাজধানীজুড়ে ছড়িয়েছে বিষাক্ত ধোঁয়া, শ্বাস নিতে হিমশিম নাগরিকদের। ইন্ডিয়া গেটে দূষণবিরোধী বিক্ষোভে উত্তপ্ত দিল্লি, আটক আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেস নেতারা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার তথ্য জাল করছে। প্রশাসনের দাবি, বাতাস স্থির থাকায় দূষণ বাড়ছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
delhi air pollution protest


নিজস্ব সংবাদদাতা: দিল্লি যেন আজ এক জীবন্ত ‘গ্যাস চেম্বার’। শহরের বাতাসে মিশে যাচ্ছে বিষ। রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বায়ু দূষণের সূচক বা AQI ৪০০ ছাড়িয়েছে, যা ‘গুরুতর বিপজ্জনক’ স্তরে পৌঁছেছে। সকাল থেকে শহরের আকাশ ঝাপসা, রাস্তায় ধোঁয়াশার চাদর। মানুষের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমার রোগীর ভিড়।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই দিল্লির ইন্ডিয়া গেট এলাকায় শুরু হয় প্রবল বিক্ষোভ। দূষণ রোধে পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগে পথে নামেন সাধারণ মানুষ, সমাজকর্মী, এমনকি রাজনৈতিক নেতারাও। আম আদমি পার্টি (AAP) এবং কংগ্রেস-এর বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীও বিক্ষোভে যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সৌরভ ভারদ্বাজ সহ একাধিক শীর্ষ নেতা। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ইন্ডিয়া গেটের মতো উচ্চ নিরাপত্তা এলাকায় এই বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিক্ষোভকারীদের জন্তর মন्तर-এ যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

delhi pollution a

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার দূষণ নিয়ে তথ্য গোপন করছে। তাঁদের দাবি, “সরকার মিথ্যা প্রচার করছে— বলছে AQI কমেছে। অথচ দিল্লির মানুষ প্রতিদিন বিষ খাচ্ছে। আমরা শ্বাস নিতে পারছি না।” এক প্রতিবাদীর কথায়, “এটা শুধু আমাদের নয়, আমাদের সন্তানদের বাঁচানোর লড়াই।”

দিল্লি প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বাতাসে বিষাক্ত কণার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হল তাপমাত্রা হ্রাস, স্থির বাতাস, ও যানবাহন ও কারখানার নির্গমন বৃদ্ধি। নাগরিকদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং সরকারি অফিসে ওয়ার্ক ফ্রম হোম চালু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। শহরের স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সকাল থেকে মাস্ক পরে রাস্তায় মানুষ। যানবাহনের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন— “দূষণের এই মাত্রা দীর্ঘস্থায়ী হলে মারাত্মক ফুসফুস ও হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হবে।”

দিল্লির মানুষ বলছে, “এই শহর এখন মৃত্যু ফাঁদ। সরকার চুপ, আর আমরা ধীরে ধীরে দম বন্ধ হয়ে মরছি।”