অন্ধ্র কাঁপিয়ে বাংলায় মন্থা! উত্তরবঙ্গে ফের দুর্যোগের আশঙ্কা, কমলা সতর্কতা জারি

ঘূর্ণিঝড় মন্থার দাপটে অন্ধ্রপ্রদেশে তাণ্ডব, একাধিক মৃত্যু ও আহত। এর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। উত্তরবঙ্গে ভূমিধসের সতর্কতা, দক্ষিণবঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
heavy rainfall3.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ (Cyclone Montha) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভয়ংকর দাপট নিয়ে আছড়ে পড়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে। প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকা। ইতিমধ্যেই সেই ঘূর্ণিঝড় রাজ্যের ভিতরে প্রবেশ করেছে এবং এর প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গেও।

অন্ধ্রের কোনাসীমা জেলায় এক বৃদ্ধা নিজের বাড়িতে গাছ চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। একই জেলার আরেক ঘটনায় ঝড়ে উপড়ে পড়া নারকেল গাছ একটি অটোচালক ও এক নাবালককে গুরুতর জখম করেছে। প্রবল বর্ষণে ওই রাজ্যের একাধিক জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত।

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে প্রবেশের পর কিছুটা শক্তি হারালেও এখনো বিপজ্জনক। মন্থা এখন ধীরে ধীরে ছত্তিশগড় ও বিহারের দিকে সরে যাচ্ছে। তবে এর বৃষ্টির প্রভাব থাকবে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলার বহু জেলায়।

উত্তরবঙ্গে ফের দুর্যোগের আশঙ্কা। আবহাওয়া দফতর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা (Orange Alert) জারি করেছে। বিশেষত পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তিস্তা, জলঢাকা, তোর্সার মতো নদীগুলির জলস্তর দ্রুত বাড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

heavy rain  in tamil nadu.jpg

দক্ষিণবঙ্গেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ ও মাঝেমধ্যে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহবিদরা সতর্ক করছেন, কার্তিক মাসের এই সময়ে এমন ভারী বৃষ্টি কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষত পাকা ধান ও আলু চাষের ক্ষতি হতে পারে। বৃষ্টির জেরে ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ইতিমধ্যেই ঝোড়ো হাওয়া বইছে এবং নিম্নাঞ্চলে জল জমার আশঙ্কা রয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মহকুমা ও ব্লক স্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ইতিমধ্যেই সমস্ত জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন। ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখতে হবে এবং নিচু এলাকার বাসিন্দাদের আগাম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি মন্থা এখন কিছুটা দুর্বল হলেও, তার বৃষ্টির প্রভাব ও পরোক্ষ ধাক্কা আগামী তিন দিন ধরে রাজ্যজুড়ে থাকতে পারে। ফলে, উত্তর থেকে দক্ষিণ— গোটা বাংলা এখন মন্থার চোখে চোখ রেখে লড়ছে।