/anm-bengali/media/media_files/2025/08/19/rajasthan-murder-2025-08-19-20-24-31.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজস্থানের আলওয়ারে নীল ড্রামের ভেতর থেকে পচা মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার কয়েকদিন পর প্রকাশ্যে এলো ভয়ঙ্কর তথ্য। মৃত ব্যক্তি হংসরাজের ৮ বছরের ছেলে হর্ষল পুলিশের কাছে জানায়, সে নিজ চোখে দেখেছে কীভাবে তার বাবা খুন হওয়ার পর দেহ ড্রামের ভেতর ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল। ছোট্ট এই সাক্ষীর বয়ানেই উন্মোচিত হয়েছে নৃশংস খুনের পুরো কাহিনি।
হর্ষল জানায়, হত্যার আগের রাতে তার বাবা, মা সুনীতা এবং বাড়িওয়ালার ছেলে জিতেন্দ্র শর্মা (যিনি পরে খুনি হিসেবে চিহ্নিত হন) একসঙ্গে মদ খাচ্ছিলেন। মা দু’এক পেগ খেলেও বাবা আর জিতেন্দ্র অতিরিক্ত মদ খেয়ে ফেলেন। এর পর বাবা মাকে মারধর শুরু করেন। তখন জিতেন্দ্র বাঁচাতে এলে হংসরাজ হুমকি দেন, “তুই যদি তাকে বাঁচাস, তোকে-ও মেরে ফেলব।” এরপরই জিতেন্দ্র হংসরাজের ওপর চড়াও হয়ে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে।
হর্ষল আরও জানায়, পরে মা তাকে ঘুমোতে যেতে বলে। সকালে ঘুম ভাঙার পর সে দেখে বাবা বিছানায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। কিছুক্ষণ পর আবার দেখে মা আর জিতেন্দ্র বাবাকে লুকোনোর চেষ্টা করছে। এসময় বাড়িওয়ালা তাদের খোঁজ করতে থাকায় আতঙ্কে খুনি জিতেন্দ্র মা ও সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে যায়।
হর্ষল স্পষ্টভাবে বলে, নীল রঙের যে ড্রামে দেহ পাওয়া গেছে, সেটিই আগে জল রাখার জন্য ব্যবহার করা হতো। খুনিরা প্রথমে সেই ড্রামের জল ফেলে দিয়ে বাবার দেহ ভরে রান্নাঘরে রেখে দেয়। ছোট্ট হর্ষল মাকে প্রশ্ন করেছিল, কেন এটা করা হচ্ছে? জবাবে মা-জিতেন্দ্র তাকে বলে—“তোমার বাবা মারা গেছে।”
পুলিশ তদন্তে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য পেয়েছে। জানা গেছে, সুনীতা ও জিতেন্দ্র গত চার মাস ধরে অবৈধ সম্পর্কে জড়িত ছিল। বিষয়টি হংসরাজ জানার পর থেকেই দাম্পত্য কলহ চরমে ওঠে। প্রতিদিন ঝগড়া, মারধর চলতে থাকায় দু’জনে মিলে হংসরাজকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। হত্যার পর ড্রামে নুন ভরে দেহ গলিয়ে ফেলতে চেয়েছিল তারা।
/filters:format(webp)/anm-bengali/media/media_files/AnAtspi9lEQ9Pr0nix97.jpg)
ঘটনার পর থেকে সুনীতা, তার তিন সন্তান এবং জিতেন্দ্র নিখোঁজ ছিল। পুলিশের তল্লাশিতে ৫০ কিমি দূরে একটি ইটভাটায় গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শিশুদের দায়িত্ব এখন নিহতের দাদু-দিদার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
হর্ষল আরও জানায়, তার বাবা নিয়মিত মাকে মারধর করত, সিগারেট দিয়ে শরীর পোড়াত, এমনকি তাকে-ও নির্যাতন করত। মাত্র কয়েকদিন আগে ১৫ আগস্ট সে বাবার হাতে ব্লেডের আঘাত পেয়েছিল।
এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মীরাটের আরেক ঘটনার মিল পাওয়া যাচ্ছে। সেখানেও এক নারী ও তার প্রেমিক স্বামীকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে সিমেন্টভরা ড্রামের নিচে লুকিয়েছিল। সেখানকার ঘটনাও সামনে আসে সন্তানের মুখে বারবার উচ্চারিত সেই সত্য—“পাপা ড্রামে আছেন।”
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us