/anm-bengali/media/media_files/2025/10/12/chemistry-2025-10-12-22-21-08.png)
নিজস্ব সংবাদদাতা: চলচ্চিত্র নাকি জীবনের প্রতিচ্ছবি — কিন্তু কখনও কখনও জীবনই সিনেমার গল্পকে হার মানায়। জনপ্রিয় সিরিজ ব্রেকিং ব্যাড–এ যেমন এক রসায়নের অধ্যাপক নিজের মরণব্যাধির কথা জেনে মাদক তৈরিতে নামেন, তেমনই এক বাস্তব চরিত্র দিল্লিতে রচনা করেছে অবিশ্বাস্য গল্প। নাম দীপ শুভম, বয়স ৩২, পেশায় রসায়নশাস্ত্রের গবেষক, কিন্তু অতিসাধারণ জীবনযাপনের ফাঁদে পড়ে হয়ে উঠেছিলেন ব্যাংক ডাকাত!
বিহারের সীতামারির বাসিন্দা দীপ পড়েছিলেন দিল্লির কিরোরি মাল কলেজে, সেখান থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পাশ করেন। পরে এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। এখানেই শেষ নয় — আইন পড়ার স্বপ্নে তিনি Common Law Admission Test (CLAT) উত্তীর্ণ হয়ে এলএলবি কোর্স শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরিবারে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেওয়ায় তাঁকে পড়া ছাড়তে হয়। পুলিশের কাছে দীপের স্বীকারোক্তি, তখনই জীবনের মোড় ঘুরে যায়। বাড়ি থেকে অর্থ না আসায় শুরু হয় ভুল সিদ্ধান্তের অধ্যায়।
২০১৭ সালে প্রথম বার অপরাধের জগতে পা রাখেন দীপ। নিজের রসায়ন জ্ঞানকে ব্যবহার করে তৈরি করেন এক ‘স্মোক বোমা’। ফায়ারক্র্যাকার, মিথাইল অ্যাসিটেট ও বেঞ্জিন— এই তিন উপাদান মিশিয়ে তিনি বিস্ফোরকটি বানান। তারপর সেটি ব্যবহার করে বিহারের সীতামারি জেলার ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার শাখায় ডাকাতি করেন। নগদ ৩.৬ লক্ষ টাকা লুঠের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়, এবং দোষী সাব্যস্ত হন।
/filters:format(webp)/anm-bengali/media/media_files/2025/07/28/arrested-a-2025-07-28-18-53-37.jpg)
জেল থেকে বেরিয়ে নতুন জীবনের সুযোগ এসেছিল তাঁর সামনে। কিন্তু দীপ ফের অন্ধকারকেই বেছে নেন। এবার সঙ্গী হয় রিতেশ ঠাকুর নামে এক অপরাধী। দু‘জনে মিলে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দিল্লির গুজরানওয়ালা অঞ্চলের দুই ব্যাংকে সশস্ত্র ডাকাতি চালায়। পুলিশের সূত্রে খবর, সেই দুই ঘটনায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকার গয়না ও একাধিক মোবাইল ফোন চুরি হয়।
অনেকে ভেবেছিলেন, দীপ শুভম হয়তো অতীত ভুলে ঘরে ফিরবেন। বাস্তবে হল উল্টোটা। দিল্লি পুলিশের প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি (technical surveillance) তাঁকে শেষ পর্যন্ত ধরে ফেলে। গত সপ্তাহে হরিয়ানার সোহনা অঞ্চলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এখন তিনি ২০১৭ ও ২০২১ সালের ব্যাংক ডাকাতির মামলায় অভিযুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের আগে দীপ একটি ইন্টেরিয়র ডিজাইন সংস্থায় কাজ করছিলেন। জীবনটা স্বাভাবিক পথে ফেরানোর চেষ্টা করলেও আইনের চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। পুলিশের এক আধিকারিকের মন্তব্য, “শিক্ষিত ছেলেটি নিজের বুদ্ধিকে যদি ভালো কাজে ব্যবহার করত, হয়তো আজ তাকে আমরা অপরাধী হিসেবে দেখতাম না।”
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us