ডিপ্লোম্যাট সাজে ৩০০ কোটির প্রতারণা! গাজিয়াবাদে ফেঁসে গেল ভুয়ো দূতাবাসের কাণ্ডকারখানা!

গাজিয়াবাদে ভুয়ো দূতাবাস খুলে ৩০০ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
fake embassy s


নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে রীতিমতো ‘রাজনৈতিক থ্রিলার’-এর মতো এক প্রতারণার কাহিনি ফাঁস হয়েছে। নিজেকে “ওয়েস্ট আর্কটিকা” নামে এক অবাস্তব দেশের ‘ডিপ্লোম্যাট’ পরিচয় দিয়ে ভুয়ো দূতাবাস চালাচ্ছিলেন হর্ষবর্ধন জৈন নামে এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF)। তদন্তে উঠে আসছে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। অভিযোগ, একাধিক ভুয়ো দেশের নামে আন্তর্জাতিক দূতাবাস চালিয়ে, তিনি জড়িয়ে পড়েছেন প্রায় ৩০০ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রে।

গাজিয়াবাদের কবি নগরের বাসিন্দা হর্ষবর্ধন জৈন তাঁর বাড়িতে একটি ভুয়ো “কনসুলেট” বা কনস্যুলেট অফিস চালাচ্ছিলেন। সেখানে দেখা গেছে কাল্পনিক দেশের পতাকা, বিলাসবহুল গাড়ি এবং ‘ডিপ্লোম্যাটিক’ ব্লু নম্বরপ্লেট! এইসব দেখে সহজেই বিশ্বাস করতে বাধ্য হতেন সাধারণ মানুষ।

২০০৫ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে তিনি ১৬২টি আন্তর্জাতিক সফর করেছেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। এর মধ্যে ৫৪ বার সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে এবং ২২ বার যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন তিনি। এছাড়াও তিনি মরি‌শাস, ফ্রান্স, ক্যামেরুন এবং ইউরোপের আরেকটি কাল্পনিক দেশ ‘সেবোরগা’-তেও গিয়েছেন তথাকথিত ‘ডিপ্লোম্যাটিক মিশন’-এর নামে।

Arrest

তদন্তে আরও জানা গেছে, ‘ওয়েস্ট আর্কটিকা’ নামে যে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার দাবি তিনি করতেন, সেটি আদতে একটি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা গড়তে গঠিত ‘নন-প্রফিট’ সংস্থা এবং একেবারেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিহীন একটি মাইক্রোনেশন। অনুরূপভাবে, ‘লোডোনিয়া’ নামে অন্য এক ভুয়ো দেশ সুইডেনের দক্ষিণে স্বঘোষিত একটি অঞ্চল, যার কোন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই। ‘সেবোরগা’ ও ‘পৌলভিয়া’ নামের দেশগুলোরও কোনও বিশ্বাসযোগ্য অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় জৈনের বহু বিদেশ সফরের নেপথ্যে কী উদ্দেশ্য ছিল, তা এখন খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। সন্দেহ করা হচ্ছে, এই সব সফরের আড়ালে আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং এবং প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিল এই ভুয়ো কূটনীতিক।

উত্তরপ্রদেশ STF-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই প্রতারণা কাণ্ডে আরও বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার নাম জড়িয়ে থাকতে পারে। তদন্ত জোরকদমে চলছে।