এক বছর ধরে নির্যাতন! শিমলায় দলিত শিশুকে জ্যান্ত বিছে ঢুকিয়ে অত্যাচার

শিমলায় সরকারি স্কুলে ৮ বছরের দলিত ছাত্রকে প্রায় এক বছর ধরে নির্যাতন, প্যান্টে বিছে ঢোকানোর অভিযোগ। প্রধান শিক্ষক সহ তিন শিক্ষক গ্রেপ্তারযোগ্য অভিযুক্ত। এসসি/এসটি অ্যাক্টে মামলা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
crime

নিজস্ব সংবাদদাতা: শিমলার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে অকল্পনীয় নির্যাতন। মাত্র আট বছরের এক দলিত শিশুকে নৃশংসভাবে মারধর করা হয়েছে প্রায় এক বছর ধরে। শুধু তাই নয়, তাকে টয়লেটে নিয়ে গিয়ে শিক্ষকেরাই তার প্যান্টের ভিতর জ্যান্ত বিছে ঢুকিয়ে দেয়— এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন শিশুটির বাবা। ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রধান শিক্ষক সহ তিনজন শিক্ষককে অভিযুক্ত করেছে পুলিশ। গোটা এলাকা উত্তেজনায় উত্তপ্ত।

রোহরু উপবিভাগের খাড্ডাপানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ওই শিশু। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক দেবেন্দ্র এবং দুই শিক্ষক বাবু রাম ও কৃতিকা ঠাকুর প্রায়ই শিশুটিকে মারধর করতেন। দিনের পর দিন চলত অত্যাচার। এতটাই মারধর করা হয় যে শিশুটির কান দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে এবং কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু ভয় দেখিয়ে সেই যন্ত্রণা চেপে রাখতে বাধ্য করা হয়েছিল তাকে। শিক্ষকরা নাকি বলেছিল— “বাড়িতে বললে জেলে ভরব।”

arrested a

শিশুটির বাবার অভিযোগ, একদিন তাকে স্কুলের টয়লেটে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তার প্যান্টের মধ্যে বিছে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে ঘটনা জানায় ছেলে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের। অভিযোগ প্রকাশ্যে আনতেই ভয়ংকর হুমকি আসে। দাবি করা হয়েছে, ৩০ অক্টোবর প্রধান শিক্ষক নাকি শিশুটিকে স্কুল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন এবং বলেন— “বাইরে কাউকে বললে তোকে আর তোর পরিবারকে পুড়িয়ে দেব।” শুধু তাই নয়, শিশুটির বাবাকে বলা হয়, “পুলিশে গেলে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে জীবন নিয়ে থাকতে হবে না।”

আরও বিস্ফোরক অভিযোগ— শিক্ষক কৃতিকা ঠাকুর নাকি বহুদিন ক্লাসে থাকেন না, তার বদলে অবৈধভাবে তার স্বামী নীতিশ ঠাকুরই পড়ান স্কুলে।

অবশেষে সাহস করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শিশুটির পরিবার। পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা করেছে, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এসসি/এসটি অ্যাট্রোসিটি আইন এবং জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট। তদন্ত কর্মকর্তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশের অপেক্ষা চলছে। ভয়, আতঙ্ক আর ক্ষোভে রক্তগরম শিমলার মানুষ।

এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলছে— স্কুল কি তবে নিরাপত্তার জায়গা? নাকি শিশুর দুঃস্বপ্নের কারাগার?