প্রথম সন্তান জন্মের ১২৫ দিন পর দ্বিতীয় সন্তান, নজির বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের

বর্ধমানের পম্পা প্রামানিকের যমজ সন্তান হওয়ার কথা ছিল। প্রথম সন্তানকে ১৭ সপ্তাহের মাথাতেই গর্ভ থেকে বের করে আনতে হয়। তার ১২৫ দিন পর দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন তিনি।

New Update
baby 9.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা:  সাধারণত কয়েক মিনিটের ফারাকে যমজ সন্তাবরা পৃথিবীতে আসে। কিন্তু যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে অনেক সময় শারীরিক নানা কারণে একটি শিশুকে আগে মাতৃগর্ভ থেকে বের করে আনতে হয়। অন্য শিশুটিকে মাতগর্ভে রেখে দিতে হয়। এই ধরনের ঘটনা যেমন বিরল তেমনি ডাক্তারদের কাছে চ্যালেঞ্জিং। এমন চ্যালেঞ্জিং কাজটাই সফল করে দেখালেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা। 

জামালপুরের কুনিল গ্রামের বাসিন্দা পম্পা প্রামানিকের প্রথমবার আইভিএফ ব্যর্থ হয়ে যায়। দ্বিতীয় বারের আইভিএফ সফল হয়।  তাঁর যমজ সন্তান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৭ সপ্তাহের মাথায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সময়ের অনেক আগেই তাঁর একটি সন্তানের জন্ম হয়। দ্বিতীয় সন্তানকে মাতৃগর্ভেই রেখে দিতে হয়। ১২৫ দিন পর পম্পা তাঁর দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যেহেতু পম্পা প্রামাণিকের এটি দ্বিতীয় আইভিএফ, তাই শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় তার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া যথেষ্ঠ চ্যালেঞ্জিং ছিল। 

চিকিৎসকদের ভাষায় এই ধরনের ডেলিভারিকে 'delayed delivery of second twin's baby' বলে। চিকিৎসকরা জানান, এই পরিস্থিতিতে মাকে সুস্থ রাখা সব থেকে চ্যালেঞ্জিং। মায়ের শরীর ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে, প্রথম সন্তান হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় সন্তান তাড়াতাড়ি হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও এই সময়ে গর্ভ ফুলে লিকিউড কমে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থেকে। এরফলে শিশুদের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। নানা ধরনের বিপদ মা ও সন্তানের আসতে পারে। এক্ষেত্রে প্রসূতি পম্পা প্রামাণিকের প্রথম সন্তান জন্মের পর থেকে সরকারি হাসপাতালেই বিশেষ যত্নে রাখা হয়েছিল। যাতে কোনওভাবেই প্রসূতির শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে না পড়ে সেই দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গর্ভস্থ সন্তানের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল। 

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এইভাবে যমজ শিশুর সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা প্রথম। সফলভাবে দুই শিশুকে পৃথিবীর আলো দেখাতে পেরেছেন চিকিৎসকরা। প্রসূতিকে কোনও ইনফেকশন হতে দেননি। ঘটনায় খুশি চিকিৎসকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ ছিল। প্রসূতির বয়স ৪১ বছর এটা তাঁর দ্বিতীয় আইভিএফ। সেই কারণে চ্যালেঞ্জটা অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। সফল হতে পেরে তাঁকা আনন্দিত। তাঁরা পম্পা প্রামাণিকের দ্বিতীয় পুত্র সন্তানেক নাম দিয়েছেন সাফল্য।  হাসপাতালের তরফে পম্পার দ্বিতীয় সন্তানের নাম দেওয়া হয়েছে সাফল্য।