ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রাম ব্লকের গড় শালবনী, জিতুশোল সহ আশপাশের প্রায় দশটি গ্রামে চরম পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় মানুষ। অভিযোগ, এলাকার স্পঞ্জ আয়রন কারখানাটি একাধিকবার জোরপূর্বক জমি দখল, কৃষিজমিতে ধূলিকণা (ডাস্ট) ফেলা এবং দূষিত জল ছেড়ে জমির ফসল নষ্ট করার মতো কাজ করেছে। এর ফলে পরিবেশ যেমন বিপর্যস্ত হয়েছে, তেমনি জীবজন্তু ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনও হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তারা বহুবার স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন এই দূষণ এবং জমি দখলের বিষয়ে। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে কার্যত কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ায়, বাধ্য হয়েই এবার রাস্তায় নেমেছেন গড় শালবনী ও আশপাশের গ্রামের মানুষ। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান—"আমাদের জমি ফেরাও", "শুদ্ধ পরিবেশ চাই", "দূষণ বন্ধ করো"—এই দাবিগুলি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শতাধিক গ্রামবাসী। বিক্ষোভকারী বলেন, "কারখানা থাকুক, কিন্তু তার জন্য আমাদের জীবন নষ্ট হবে কেন? জমিতে ফসল হচ্ছে না, বাচ্চারা অসুস্থ হচ্ছে, জল দূষিত। আমরা কোথায় যাব?"পরিবেশবিদদের মতে, স্পঞ্জ আয়রন উৎপাদনে ব্যবহৃত ধূলিকণা ও রাসায়নিক পদার্থ জল ও বাতাসকে মারাত্মকভাবে দূষিত করে। যদি নিয়ন্ত্রিতভাবে কারখানাটি পরিচালিত না হয়, তাহলে তার প্রভাব ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ হতে পারে।
প্রধান দাবিগুলি হল: জোর করে জমি দখল বন্ধ করতে হবে, জমিতে ডাস্ট ফেলা ও দূষিত জল ছাড়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে, দূষণের কারণে নষ্ট হওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে, এলাকার পরিবেশ রক্ষা ও পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের তৎপরতা নিশ্চিত করতে হবে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ এই দীর্ঘদিনের অভিযোগ ও চলমান আন্দোলনের প্রতি কতটা সংবেদনশীল হয় এবং কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে কি না।
/anm-bengali/media/post_attachments/fd57840d-394.png)