অনুদান বাড়লেও বাজেটে কাটছাট! কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন প্রতিমা শিল্পীরা

পুজোর বাজেট বাড়ছে। বাড়ছে সরকারি অনুদানও। কেমন আছেন প্রতিমা শিল্পীরা? যাদের হাতে উমার জন্ম তাদের পেটে এখনও টান। চন্দ্রকোনার কুমোর পাড়ার শিল্পীদের বিশেষ আর্জি সরকারের কাছে।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
োেো

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : আগের তুলনায় এবার বায়না ভালো। কিন্তু অনেক দেরিতে আসছে বায়না। স্বল্প সময়ে দুর্গা প্রতিমা প্রস্তুত করাই চ্যালেঞ্জ চন্দ্রকোনার কুমোরটুলিতে। জোরকদমে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।পুজো কমিটিগুলির সরকারি অনুদান বাড়ছে প্রতিবছর। তবুও প্রতিমার বায়নায় বাজেটে কাটছাট উদ্যোক্তাদের।সরকারি অনুদান বা শিল্পী ভাতার দাবি চন্দ্রকোনার মৃৎশিল্পীদেরও।

দুর্গা পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে,তারই সাথে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায় কুমোরটুলিতে জোরকদমে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরি কাজ।এমনই ছবি উঠে এল চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের ক্ষীরপাই পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড নুনেবাজার এলাকায়। জানা যায়,এই নুনেবাজার এলাকার কুমোরটুলিগুলি দীর্ঘ দিনের,পুজোর সময় প্রতিবছর এখান থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দুর্গা প্রতিমা পৌঁছে যেত,এমনকি একসময় এ জেলা ছাড়িয়ে পাশের জেলাতেও পাড়ি দিত বিগ বাজেটের সব দুর্গা প্রতিমা।আগের মতো আর তেমন রমরমা বাজার নেই ক্ষীরপাইয়ের নুনেবাজার এলাকার কুমোরটুলিতে।করোনার জেরে বাজারে বড়ো প্রভাব পড়েছিল তা কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পেরেছে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা,তবে বর্তমানে চড়া মুল্যবৃদ্ধি।বিগত বছরের তুলনায় বায়না বেড়েছে বলে দাবি কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী থেকে কারিগরদের।এবছর দুর্গা প্রতিমার বায়না আসছে আগের তুলনায় ভালো কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে।ফলে পুজোর ঠিক আগে উদ্যোক্তাদের প্রতিমা প্রস্তুত করে ডেলিভারি দেওয়ায় এখন বড় চ্যালেঞ্জ চন্দ্রকোনার মৃৎশিল্পীদের কাছে। এদের কথায়,প্রতিবছর বৈশাখ মাসের শেষের দিকে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয় কিন্তু এবছর শ্রাবণ মাসের শেষের দিক থেকে বায়না আসতে শুরু করেছে,ফলে শ্রমিক ও মিস্ত্রিদের কাজে পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।সবে মিলিয়ে হাতে আর প্রায় মাস দেড়েক সময় তার আগে প্রতিমা তৈরির কাজ জোরকদমেই শুরু হয়ে গিয়েছে।বাঁশের কাঠামো,ছাঁচে মাটি দিয়ে প্রতিমার মুর্তি তৈরি তো আবার প্রতিমাতে মাটির প্রলেপ দেওয়ার কাজ চলছে জোরকদমে।এখন থেকেই রাত জেগে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের।পঞ্চায়েত ভোট মিটতে পুজো উদ্যোক্তাদের পুজোর প্রস্তুতি নিতে দেরি হয়েছে ফলে বায়না আসতে শুরু করেছে অনেক দেরিতে।একেই দেরিতে বায়না তারউপর এবছর ছাঁচের প্রতিমার বায়নার থেকে সিংহভাগ থিমের প্রতিমার চাহিদা বেড়ে গিয়েছে।ফলে মৃৎশিল্পীদের অধিক পরিশ্রম যাচ্ছে থিম অনুযায়ী প্রতিমা তৈরিতে।বায়না বেশি থাকলেও উদ্যোক্তারা প্রতিমার বাজেট অনেকটাই কাটছাঁট করে উদ্যেক্তারা চাইছেন কম বাজেটের প্রতিমা।কিন্তু যেহারে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া তাতে কারিগর দিয়ে কম বাজেটের কাজ করে কতোটা লাভের মুখ দেখবে মৃৎশিল্পীরা তা নিয়ে সন্দিহান তারা।মৃৎশিল্পীদের অনেকের দাবি, তারা সরকারি কোনো স্বীকৃতি পায়নি এখনও ফলে সরকারি অনুদান বা সরকারি ভাবে ঋণ নিয়ে কাজ করার সুযোগ মিলছেনা।উদ্যোক্তারা বায়নার সময় স্বল্প টাকা দিয়ে চলে যায়,বাকি টাকা পুজোর ঠিক আগে প্রতিমা আনতে আসার সময় মেটায়।তার আগে তাদের গাঁটের কড়ি খরচ করে প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে হিমশিম খেতে হয়।এক্ষেত্রে সরকারি ভাবে ঋণ বা কোনো অনুদানের ব্যবস্থা থাকলে কাজের ক্ষেত্রে দুঃশ্চিন্তা কাটতো বলে জানান মৃৎশিল্পীরা। প্রতিবছর পুজো উদ্যোক্তাদের সরকার অনুদান বাড়িয়ে চলেছে তবুও তারা প্রতিমার ক্ষেত্রে খরচ কমাচ্ছে ফলে আখেরে পেটে টান পড়ছে মৃৎশিল্পীদের, এমনও দাবি অনেক মৃৎশিল্পীদের।সামনেই পুজো। হাতে সময় কম। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিমা ডেলিভারি দিতে এখন জোর ব্যস্ততা চন্দ্রকোনার কুমোরটুলিতে।