নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুর: কাঁথি শহরের বুকে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে এক নিঃসঙ্গ কাঠামো—শ্রীরূপা সিনেমা হল। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে, যেন কোনো পরিত্যক্ত কারখানা। অথচ একসময় এই হল ঘিরেই তৈরি হয়েছিল কাঁথি শহরের সাংস্কৃতিক মঞ্চ, আবেগ, প্রেম, বন্ধুত্ব, আর সিনেমার প্রতি উন্মাদনা। আজ তার গেটের সামনে বড় তালা, দেওয়ালের ফাঁক গলে বেরিয়ে এসেছে বটগাছের শিকড়। সিমেন্ট ফেটে, রং চটে গিয়ে, ছেঁড়া পোস্টারগুলো যেন হাহাকার করছে। ভেতরে পড়ে থাকা ভাঙা চেয়ার, ছেঁড়া পর্দা, ছত্রাক ধরা দেওয়াল—সব মিলিয়ে শ্রীরূপা আজ শুধুই এক মৃতপ্রায় স্মৃতি।
এই শ্রীরূপা সিনেমা হলেই একদিন সকাল থেকে লাইন পড়ত টিকিটের জন্য। নতুন বাংলা ছবি, হিন্দি ব্লকবাস্টার, কখনও দক্ষিণী অ্যাকশন—সব ছবি নিয়েই উত্তেজনা থাকত দর্শকদের মধ্যে। কিন্তু এখন টিকিট কাউন্টারে শাটার নামানো। সেই কাউন্টার, যেখানে হাত বাড়িয়ে টিকিট দিতেন এক হিসাবরক্ষক—আজ তিনি নিজেই স্মৃতির ভারে নুইয়ে পড়েছেন।
শ্রীরূপার প্রাক্তন হিসাবরক্ষক গৌরীশঙ্কর পাত্রর কথায়, “একটা সময় ছিল, যখন দিনের একটাও শো ফাঁকা যেত না। এখন সেই হল বন্ধ—এই ভেবে বুকের ভেতরটা খালি হয়ে যায়”।
/anm-bengali/media/post_attachments/77891d43-1e1.png)
শ্রীরূপা সিনেমা হল এখন শুধুই এক স্মৃতির নাম। এক সময়ের আনন্দ, উল্লাস, প্রেক্ষাগৃহের গন্ধ—সবই আজ ভোঁতা হয়ে গেছে শাটারের ওপারে। সিনেমা হলে সিনেমা দেখার যে রীতি, সেটা এখন ইতিহাস। শ্রীরূপা আর কখনও খুলবে না। কারণ এই সময়টাই বদলে গেছে। এখনকার দর্শক আর সিনেমা হলের দর্শক না। তাই সিনেমা হল নয়, শুধুই পাতায় রয়ে যাবে শ্রীরূপা-র পরিচয়।