কৃত্রিম আলোর যুগেও আজও বিদ্যমান মাটির প্রদীপ!

১১০ টি হিন্দু পরিবার বিভিন্ন পাড়ায় বিভক্ত।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
WhatsApp Image 2025-10-18 at 20.16.32

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: একসময় রাজনৈতিক সংঘর্ষ আর হানাহানির জন্যই সারা রাজ্যের মধ্যে নাম উঠে আসতো পশ্চিম মেদিনীপুরের এই কেশপুরের! বোমা-বারুদের গন্ধে যেন দমবন্ধ হয়ে আসতো বাসিন্দাদের। অথচ, সেই কেশপুরেই আছে সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের গ্রাম অকুলসাড়া। হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে প্রায় ১৮০ টি পরিবার বসবাস করেন এই গ্রামে। ৭০ টি মুসলিম পরিবার চাষবাস সহ নানা ব্যবসার সাথে যুক্ত। বাকি ১১০ টি হিন্দু পরিবার বিভিন্ন পাড়ায় বিভক্ত। মাঝিপাড়া, মালাকারপাড়া ও কুমোরপাড়া। 

মাঝিপাড়ায় তৈরি হয় সবুজ আতস বাজি, মালাকারপাড়ায় চাঁদমালা সহ ঠাকুরের নানা গহনা তৈরি হয়। আবার কুমোরপাড়ার লোকজন তৈরি করেন প্রদীপ, দেওয়ালি ঘট সহ মাটির নানা জিনিসপত্র। নিম্নচাপ কেটে আকাশে রোদের দেখা মেলায় তাই অকুলসাড়ার সব পাড়াতেই এখন খুশির হাওয়া। সেই সঙ্গে দীপাবলির আগে চরম ব্যস্ততা সেখানে! 

WhatsApp Image 2025-10-18 at 10.14.12

আতস 'বাজিপাড়া' -র বাসিন্দাদের উঠোন জুড়ে মেলা রয়েছে তুবড়ি, তারাবাতি, রসবাতি প্রভৃতি। কৃত্রিম আলোর যুগেও আজও বিদ্যমান রয়েছে অকুলসাড়া গ্রামের মাটির প্রদীপের কদর! মাটির প্রদীপ শুকোচ্ছে কুমোরপাড়ায়। আর, চাঁদমালা সহ ঠাকুরের গহনা তৈরিতে ব্যস্ত মালাকারপাড়া। কেশপুরের শীর্ষা গ্রাম পঞ্চায়েতের অকুলসাড়ার মাঝিপাড়ায় ১২-১৩ টি পরিবার বংশ পরম্পরায় আতস বাজি তৈরি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের তৈরি আতস বাজি ভিনরাজ্যেও রপ্তানি হয়। 

সারা বছর অল্পবিস্তর আতস বাজি বিক্রি হলেও, কালীপুজো বা দিপাবলীর সময়ে ব্যাপক চাহিদা থাকে। স্বাভাবিকভাবেই জোগান দিতেও হিমশিম খেতে হয় উষা খামরুই, কালীপদ খামরুই, সনাতন খামরুইদের। বছর ৫০ -এর সনাতন খামরুই বলেন, "এই সময় আমরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে বাজি তৈরিতে ব্যস্ত থাকি”। তবে, বারুদ বা মশলার দাম আগের তুলনায় একটু বেড়ে যাওয়ায়, কিছুটা চিন্তিত কালীপদ, সনাতনরা। 

মালাকারপাড়ার চাঁদমালার চাহিদা বাড়ছে ভিন রাজ্যেও। কালীপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে তাই দিনরাত পরিশ্রম করে চাঁদমালা ও গয়না তৈরি করছেন ভানুমতী হালদার, সরমা হালদাররা। আবার, গণেশ দাস, শিবরানি দাসদের কুমোরপাড়া ব্যস্ত দেওয়ালির মাটির প্রদীপ জোগান দিতে।