দৃষ্টিশক্তি হারালেও হার মানেনি চন্দ্রকোনার রিম্পা! শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চলছে পড়াশোনা

হাজার প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই নিজের স্বপ্নের দিকে এগিয়ে চলেছে মেয়েটি।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
rimpa

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: বয়স বাড়ার সাথে সাথে হ্রাস পেয়েছে দৃষ্টিশক্তি। তবে বাড়ির কোনো কিছুই তার অজানা নয়। পড়াশোনা থেকে খেলা আর বাড়ির সব কাজেই এসে পারদর্শী ছিল সে। ২১ বছর বয়সী চন্দ্রকোনা বিধানসভার কঙ্কাবতী গ্রামের শচীন চট্টোপাধ্যায়ের একমাত্র কন্যা রিম্পা চট্টোপাধ্যায় ছোটবেলায় স্বাভাবিক ছিল। হঠাৎ করেই জীবনে নেমে এল এক অন্ধকার অধ্যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে দৃষ্টিশক্তি। তবে বন্ধ হয়নি তার পড়াশোনা। বাবা-মা ও প্রাইভেট টিউশনির মাস্টারদের মাধ্যমে পড়াশোনা করে সে। রিম্পা ও তার বাড়ির লোকজন জানান যে ছোটবেলাতে সেই রকমভাবে অসুবিধা ছিল না। চার বছর বয়সে সমস্যার কথা জানতে পারে রিম্পার মা। তারপর থেকেই রিম্পাকে নিয়ে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করেছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি,  বয়স বাড়ার সাথে সাথে সমস্যা বেড়েই চলেছে। জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দফতরে জানিয়েও হয়নি সুরাহা। ছোটবেলার মতোই এখনও তার পড়ার টেবিলের সামনে রয়েছে একগুচ্ছ বই, কিন্তু কিছুই দেখতে পায় না সে। বাবা-মা এক গৃহশিক্ষিকার সাহায্য নিয়ে  শ্রবন শক্তির সাহায্যে তা মুখস্ত করে রিম্পা। এইভাবেই চলছে তার পড়াশোনা। এই ভাবেই সে হুগলি জেলার অঘোর কামিনী প্রকাশচন্দ্র মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতকস্তরে ডিগ্রি নিয়ে পাস করে সে। তবে তার রেজাল্টে খুশি হয়নি সে নিজেই। আরো পড়তে চায় ও সে হতে চায় শিক্ষিকা। রিম্পার পরিবারের লোকজন জানান যে পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে অবহেলিত-লাঞ্ছিত হতে হয়েছে তাকে বিভিন্ন সময়ে তার দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার কারণে। তবে জেদ আর মনের ইচ্ছা নিয়ে রিম্পা এগিয়ে চলেছে তার স্বপ্নের দিকে। দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার কারণে একা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারে না রিম্পা। তাই বাবা শচীন চট্টোপাধ্যায় ও মা রমা চট্টোপাধ্যায় তাকে প্রত্যহ কলেজে বা প্রাইভেট টিউশনি নিয়ে যান বাড়ির সমস্ত কাজ ফেলে মেয়ের লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে। তবে তার পরিবারের লোকজন চায় প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে আর পাঁচটা ছেলে-মেয়ের মতো তাদের বাড়ির মেয়েও যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে এবং যেন তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে।

TG