চুরি! খনি অঞ্চলে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ

খনি অঞ্চলে বাড়ছে চুরি! সেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা! খোয়া যাচ্ছে যন্ত্রাংশ। প্রতিবাদে বিক্ষোভ লাউদোহায়। খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বিভিন্ন সংগঠনগুলির।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
1111111



হরি ঘোষ, লাউদোহা : খনি অঞ্চল পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের বিভিন্ন কোলিয়ারিতে চুরির ঘটনা বাড়ছে দিন দিন। ব্লকের গোগলা পঞ্চায়েত এলাকার লস্কর বাঁধ কোলিয়ারিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে একদল দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কোলিয়ারি চত্বরে ঢুকে পড়ে।  এই কোলিয়ারিতে সেই সময় থাকা জনা সাতেক কর্মীকে একটা ঘরের মধ্যে তালা বন্ধ করে অবাধে লুটপাট চালায় কোলিয়ারির গোডাউনে। কোলিয়ারি সূত্রে জানা যায়, আনুমানিক লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রাংশ চুরি করে চম্পট দিয়েছে চোরের দল।

ঘটনার খবর জানাজানি হতেই বুধবার সকাল থেকে খনি কর্মী ও কোলিয়ারির শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি ও কে কে সি নেতাকর্মীরা, কোলিয়ারির মধ্যে খনি কর্মীদের নিরাপত্তার দাবি রেখে কোলিয়ারির কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভে সামিল হন। কোলিয়ারি শ্রমিক সংগঠনের নেতা কার্তিক দাস বলেন, 'কোলিয়ারির মধ্যে রাত্রিবেলা খনি কর্মীদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। ঠিক এভাবেই ১৬ জুলাই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে একইভাবে চুরির ঘটনা ঘটে এই কোলিয়ারিতেই। আবার এক মাসের মধ্যেই ১৬ আগস্ট চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত খনি কর্মীরা।' খনিকর্মী মুকেশ পাসওয়ান জানান, কোলিয়ারির মধ্যে এইভাবে চুরির ঘটনা ঘটায় তারা আতঙ্কিত। তিনি বলেন, কিভাবে রাত্রিবেলা ডিউটি করতে আসবেন সেটা নিয়েই সংশয় রয়েছে তাদের কেন না, এই কোলিয়ারিতে রাত্রিবেলা কোনরকম নিরাপত্তা কর্মী থাকে না। একজন থাকে, তিনি লাঠিধারী । খুনি কর্মীদের সুরক্ষা দিতে কোলিয়ারির মধ্যে রাত্রিবেলা বন্দুকধারী নিরাপত্তা রক্ষীর দাবি রাখেন তারা। পাশাপাশি পুলিশ ও সিআইএসএফের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। শ্রমিক নেতা কাঞ্চন ঘোষ জানান, যেভাবে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে একেবারে পিকআপ ভ্যান নিয়ে কোলিয়ারির যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। এভাবে চলতে থাকলে কোলিয়ারি দিনের পর দিন রুগ্ন ও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। তাই অবিলম্বে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষকে এর দায়িত্ব নিতে হবে।

কোলিয়ারিতে চুরির ঘটনা ঘটায় আতঙ্কিত খনি কর্মীরা।  এ কথা স্বীকার করে লস্কর বাঁধ কোলিয়ারির ম্যানেজার এ কে পারিদা জানান, 'কোলিয়ারির মধ্যে বন্দুকধারী নিরাপত্তা রক্ষীর প্রয়োজন রয়েছে। নিরাপত্তার ফাঁক থাকার কারণে দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কোলিয়ারি চত্বরে ঢুকে অবাধে লুটপাট চালাচ্ছে। তিনি বলেন এই ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্ত বিষয় জানানো হয়েছে। এবং প্রত্যেকটি কোলিয়ারিতে দুজন করে বন্দুকধারী নিরাপত্তার রক্ষীর ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা চলছে।' তিনি বলেন, আনুমানিক প্রায় তিন লক্ষ টাকার অধিক যন্ত্রাংশ চুরি গেছে এদিন। অবশেষে ঘটনাস্থলে পৌঁছান গোগলা পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি গৌতম ঘোষ। কোলিয়ারির এজেন্ট ম্যানেজারদের সাথে খনি কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করেন। কোলিয়ারি এজেন্টদের কথায় অবশেষে বিক্ষোভ তুলে নেয় শ্রমিক সংগঠনের লোকেরা। সকাল ছয়টা থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত বিক্ষোভের জেরে বন্ধ থাকে মাধাইপুর ও লস্কর বাঁধ কোলিয়ারি দুটি।