'ব্রিজ দাও, ভোট নাও', পোস্টার ঘিরে শুরু শাসক-বিরোধী তরজা

'নো ব্রিজ নো ভোট,আর প্রতিশ্রুতি চাইনা। এবার ব্রিজ চাই, নইলে ভোট বয়কট' ব্রিজের দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে এলাকায় পড়ল পোস্টার, শোরগোল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের কেশেডাল এলাকায়।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
bridge

ব্রিজের দাবিতে পোস্টারিং

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : 'নো ব্রিজ নো ভোট,আর প্রতিশ্রুতি চাইনা। এবার ব্রিজ চাই, নইলে ভোট বয়কট' ব্রিজের দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে এলাকায় পড়ল পোস্টার,শুরু রাজনৈতিক তরজা।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে ব্রিজের দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে এহেন পোস্টারকে ঘিরে শোরগোল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের কেশেডাল এলাকায়। কেশেডাল গ্রামের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী ভগবন্তপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের চৈতন্যপুরে শিলাবতী নদীর উপর স্থায়ী ব্রিজ তৈরির দাবিতেই এই পোস্টার বলে জানা যায়। পোস্টারে 'গ্রামবাসীবৃন্দ'-র নাম উল্লেখ করা হলেও তাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। পোস্টারে উল্লেখ রয়েছে,'নো ব্রিজ নো ভোট','আর প্রতিশ্রুতি চাইনা, এবার ব্রিজের নিচে লেখা রয়েছে ব্রিজ চাই, নইলে ভোট বয়কট।' আবার কোনো পোস্টারে লেখা রয়েছে 'অনেক হল বোকা বানানো, আর নয়,ব্রিজ দাও ভোট নাও', পোস্টারের নিচে লেখা রয়েছে গ্রামবাসীবৃন্দ।জানা যায়,চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের চৈতন্যপুরে শিলাবতী নদী ও চাষীবাড় এলাকায় কেঠিয়া নদীর উপর স্থায়ী কংক্রিট ব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়ে আসছে চৈতন্যপুর,কেশেডাল সহ একাধিক গ্রামের মানুষ।দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর ধরে সরকারের কাছে দাবি জানানো হলেও তা বাস্তবে কিছুই হয়নি।এমনকি বর্তমান তৃণমূল সরকারের জমানাতেও স্থানীয় প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি থেকে জেলা এবং রাজ্যস্তরে তদ্বির করেও ব্রিজের দাবি পূরণ হয়নি বলে অভিযোগ।

ভগবন্তপুর-১ ও ভগবন্তপুর-২, এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে শিলাবতী ও কেঠিয়া নদী।ভগবন্তপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশেডাল,কমরপুর,দেউলবেড়িয়া,গদাধরপুর,ভগবন্তপুর,খিরেটি সহ একাধিক গ্রামের সংযোগকারী ভবন্তপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের চৈতন্যপুরে শিলাবতী নদী পারাপারে কাঠের  পোল।বর্তমানে এই পোলের উপর দিয়ে যাতায়াত দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০-২৫ টি গ্রামের বাসিন্দাদের।পাশাপাশি পার্শ্ববতী হুগলি জেলার সাথেও সংযোগ রয়েছে চৈতন্যপুরে এই কাঠের পোলের। জানা যায়,ভগবন্তপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে চৈতন্যপুর,চাষীবাড়,ধরমপোতা ও ঘোষকিরা এই চারটি এলাকায় শিলাবতী ও কেঠিয়া নদী পারাপারের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে কয়েকবছর আগে লক্ষাধিক টাকা ব্যায়ে চারটি কাঠের সেতু তৈরি করা হলেও তা বিগত বছর দু আগে বন্যায় জলের তোড়ে তিনটি সেতু ভেঙে গেলেও এখনও তা মেরামত বা নতুন করে তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।ফলে প্রত্যেহ স্কুল,কলেজ থেকে জরুরি পরিষেবা সংক্রান্ত সহ বিভিন্ন পেশার হাজারও মানুষের এইসব এলাকায় নদী পারাপারে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়,বন্যার সময় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠে।গ্রামের মানুষ নিজ উদ্যোগে অস্থায়ী সাঁকো বানিয়ে নদী পারাপারের বন্দোবস্ত করে। ভগবন্তপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের চৈতন্যপুর ও চাষীবাড় এলাকায় দুটি স্থায়ী কংক্রিট ব্রিজ তৈরির জন্য বিগত ৪৫ বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসীরা,লিখিত আকারে বিভিন্ন দপ্তরে সেই দাবিপত্র পেশ করা হলেও কোনো কাজের কাজ কিছুই হয়নি।তাই চৈতন্যপুর ও চাষীবাড় এলাকায় কংক্রিট ব্রিজের দাবিতেই ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে এই পোস্টারিং বলে জানাচ্ছেন কেশেডাল,চৈতন্যপুর,সহ পার্শ্ববর্তী একাধিক গ্রামের মানুষ।  ভোটের আগে এই পোস্টারিংকে ঘিরে শাসক বিরোধী তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে।

বিজেপির দাবি,গ্রামবাসীদের দাবি ন্যায্য। তারা তাদের পাশে থেকে আন্দোলন করবে এবং পঞ্চায়েত ভোটে এই ব্রিজের দাবিকে হাতিয়ার করে প্রচারে নামবে। অপরদিকে, তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা এই পোস্টারিংয়ের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে।গ্রামবাসীদের নাম করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে বিজেপিই এই পোস্টারিং করেছে।মানুষ সরকারের উন্নয়নের সাথে রয়েছে বলে দাবি তাদের।সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে ব্রিজের দাবিকে ঘিরে ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে এলাকায় পোস্টারিংয়ের ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসকদল মত রাজনৈতিক মহলে।