পুজোয় লাগে না পুরোহিত, এখানে আপনিই পুরোহিত! জানেন "ক্ষীরপাইয়ের বড়মা"র কথা?

নামেই নয় দেখতেও বড় এই মা।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
WhatsApp Image 2025-10-16 at 6.14.14 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড চিরকুনডাঙ্গা এলাকায় রয়েছেন কংক্রিটের তৈরি ৪৫ ফুট উচ্চতার বিশালাকার কালী প্রতিমা যা ভক্তদের কাছে 'বড়মা' নামেই পরিচিত । শুধু চন্দ্রকোনা নয় জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলা এমনকি ভিনরাজ্যের মানুষও এই কালীমাকে বড়মা নামেই জানে। ক্ষীরপাইয়ের বড়মার পুজোর অপেক্ষায় থাকে অগনিত মানুষ। শ্মশানকালী হলেও এই পুজোয় বলি হয় না। 

সমস্ত রীতি মেনেই এখানে পুজো হয়। পুজোর পরের দিন হাজার হাজার মানুষ আসে মায়ের খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ার জন্য। শ্মশানের উপর বড়মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা শুদ্ধদেব রায়। প্রথমে মাটির চালায় প্রতিমা তৈরি করে পুজো শুরু করেন যাকে ছোটো মা নামেই ডাকা হত। তবে বন্যা কবলিত এলাকা হওয়ায় একবার বন্যায় ছোটো মায়ের মাটির চালা ডুবে গিয়ে মূর্তি ভেঙে যায়। ছোটো মায়ের মন্দিরের সাথে সাথে তাই তার মূর্তিও আবার তৈরি করা হয়। ছোটো মায়ের পাশেই ৪৫ ফুট উচ্চতার বড়মায়ের মুর্তি রয়েছে যার সমান উচ্চতার মূর্তি জেলা কেন রাজ্যজুড়েও পাওয়া যাবে না বলেই মত প্রতিষ্ঠাতা থেকে অগনিত ভক্তদেরও। 

অমবস্যা তিথি ও কালীপূজোর সময় ছাড়া বড়মায়ের মন্দিরে থাকে না কোনও পূজারী। তিথির সময় ছাড়াও প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্তের অগনিত মানুষ মায়ের দর্শনে আসে ও নিজেরাই নিজের মতো করে মায়ের পুজো দিতে পারে পুরোহিত ছাড়াই। বিশালাকার কালী মন্দিরের বৈশিষ্ট্য নজরকাড়ে সকলেরই। যেমন আগত ভক্তদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আছে কোনও রুপ দক্ষিণা দেওয়ার ক্ষেত্রে। কোনও প্রণামী বক্স নেই মন্দিরে।অনেক ভক্তের দাবি মায়ের কাছে মন থেকে কিছু চাইলে তা পূরণ হবেই। বিভিন্ন রোগের নিরাময়ের জন্যও অনেকে মায়ের শরণাপন্ন হয় এবং অনেকের দাবি তাতে খালিহাতে ফেরেনি কেউ। 'অর্থের বিনিময়ে নয় নিজে হাতে পুজো করুন মাকে যাচাই করুন 'মন্দিরে লেখা এমনই বাণী চোখে পড়বে সকলের। বিশালাকার বড় মায়ের এক হাতে রয়েছে পৃথিবী আর এক হাতে রয়েছে সাদা পায়রা। বাকি দুই হাতে কারতান ও মুন্ডচ্ছেদ।মায়ের রুদ্র রুপের পাশাপাশি ধরিত্রীর রক্ষাকর্তা ও শান্তির বাহক হিসেবে একহাতে পৃথিবী ও অপর হাতে পায়রা রয়েছে বলে জানা যায়। বড়মার পুজোয় বলি না হলেও পাশে ছোটো মায়ের পুজোয় বলি হয়। বলির মাংস প্রসাদ হিসাবে পরদিন খিচুড়ি প্রসাদে মিশিয়ে দিয়ে ভক্তদের ভোজন করানো হয়। সামনেই কালীপুজো। পুজোয় জাঁকজমক না থাকলেও ভক্তদের আরাধনায় প্রতি বছর ক্ষীরপাইয়ের বড়মার পুজোয় মানুষের ভিড়ই বুঝিয়ে দেয় ভক্তির আসল সংজ্ঞা।

WhatsApp Image 2025-10-16 at 6.15.15 PM