অভাবের মাঝে ডাক্তার হতে চায় মাধ্যমিকে ৯২ শতাংশের বেশি পাওয়া লাবনী

গর্বিত পরিবার।

author-image
Anusmita Bhattacharya
আপডেট করা হয়েছে
New Update
WhatsApp Image 2025-05-07 at 10.21.10 AM

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: দিনেদুপুরে শোনা যেত গুলির আওয়াজ। রাস্তায় পড়ে থাকত মৃতদেহ। ২০০৯-'১০ সালের সেই ভয়াবহ দিনগুলির কথা স্মরণ করলে আজও শিউরে ওঠেন পিড়াকাটার বাসিন্দারা। ২০০৯ সালের সেই ভয়াবহ সময়েই পিড়াকাটা সংলগ্ন জঙ্গলঘেরা একটি গ্রামে জন্ম লাবনীর। মাধ্যমিকে ৯২ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে প্রত্যন্ত বহড়াবনী গ্রামের সেই লাবনী মাহাত মুখ উজ্জ্বল করেছে বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ গ্রামবাসীদের। পিড়াকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী লাবনী এবার মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬৪৭ নম্বর (প্রায় ৯২.৫ শতাংশ)। অঙ্কে ৯৬, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৩ নম্বর পাওয়া লাবনী ডাক্তার হতে চায়। যদিও, তার স্বপ্নপূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে অভাব, আশঙ্কা করছেন লাবনীর বাবা যিনি পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার। আর এই খবর শোনামাত্রই লাবনীর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি জানিয়েছেন, "আমরা লাবনীর জন্য গর্বিত। আগামীদিনে ও আরও এগিয়ে যাক। আমরা সর্বতোভাবে ওর পাশে থাকব"।

শুধু লাবনীই নয় একসময়ের মাও 'আঁতুড়ঘর' শালবনী ব্লকের পিড়াকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের আরও বেশ কয়েকজন 'কন্যাশ্রী'-ই এবার নজরকাড়া ফল করেছে। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে বিদিশা লাহা, ৬৭৩। তারপর যথাক্রমে- লাবনী মাহাত (৬৪৭), শ্রেয়সী পাল (৬৪২), মল্লিকা মাহাত (৬৪২), রিম্পা মাহাত (৫৯৬)।  ক্লাসে বরবারই দ্বিতীয় স্থান অধিকার করত লাবনী। মাধ্যমিকেও সেই সাফল্য বজায় রেখেছে। পিড়াকাটা হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি পিন্টু ওঝা জানান যে সরকারের দেওয়া 'সবুজসাথী' সাইকেলে করে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে পিড়াকাটা হাইস্কুলে যাওয়া, কোচিং সেন্টারে বিজ্ঞানের বিষয়গুলি ঝালিয়ে নেওয়া, তারপর বাড়ি ফিরে নিজের মতো করে পড়া- সবকিছুই মন দিয়ে করেছে লাবনী। বহড়াবনী গ্রামের বাসিন্দা তথা পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ির সিভিক ভলেন্টিয়ার কিনু'র দুই মেয়ের মধ্যে লাবনীই বড়। ছোট মেয়ে শ্রাবণী পিড়াকাটা হাইস্কুলেই অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। স্ত্রী রীনা গৃহবধূ। একচিলতে মাটির বাড়িতে কোনওমতে দিন কাটে চারজনের। সিভিক ভলেন্টিয়ারের সামান্য বেতনে চারজনের সংসার চালাতেই যেখানে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে মেয়ের জন্য আলাদা করে গৃহশিক্ষকের ব্যবস্থাও করতে পারেননি কিনু।কাজেই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই ছিল লাবনীর ভরসা। 

WhatsApp Image 2025-05-07 at 10.21.09 AM

digad