আন্তর্জাতিক মঞ্চে জনা মান্ডির প্রযোজিত ছবি ‘প্যাপায়া’-র জয়যাত্রা

প্রদর্শিত হল জার্মানির খ্যাতনামা এবারহার্ড কার্লস টিউবিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
WhatsApp Image 2025-06-12 at 11.53.08 (1)

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম: আয়রন ম্যান খেতাব জয় করে আন্তর্জাতিক মহলে নজর কাড়ার পর ফের একবার চমক দিলেন জঙ্গলমহলের ভূমিপুত্র জনা মান্ডি। এবার তাঁর প্রযোজনায় তৈরি স্বল্পদৈর্ঘ্যের বাংলা চলচ্চিত্র ‘প্যাপায়া’ প্রদর্শিত হল জার্মানির খ্যাতনামা এবারহার্ড কার্লস টিউবিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ব বিভাগ এবং মিউজিক ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম স্ক্রিনিং-এ ছবিটি প্রদর্শিত হয়। বিভিন্ন দেশের নৃতত্ত্ববিদ্যা বিভাগের ছাত্রছাত্রী ও গবেষকরা ছবিটি দেখে ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রদর্শনীর শেষে এক মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়, যেখানে জনা মান্ডি স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন এবং দর্শকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। 

ছবির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে তুফান নামে এক আদিবাসী শিশুকে ঘিরে, যার ছোট্ট একটি স্বপ্ন - সাইকেল চড়া। সেই স্বপ্নপূরণের পথ তাকে নিয়ে যায় এক অজানা ফল ‘প্যাপায়া’-র সন্ধানে, যা সে চিনতেই পারে না। এই অনুসন্ধানের মধ্য দিয়েই ফুটে ওঠে গ্রামীণ জীবনের সরলতা, শিশুদের স্বাভাবিক কৌতূহল, আর তথ্যের অভাব কীভাবে তাদের জীবনকে প্রভাবিত করে।

WhatsApp Image 2025-06-12 at 11.53.08

ছবিটি পরিচালনা করেছেন ওড়িশার বারিপদার দীপককুমার বেসরা। গল্প লিখেছেন বিনোদ সিনহা, আর সহ-প্রযোজক হিসেবে জনার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন তিনি। জনা মান্ডি নিজে ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের পালোইডাঙা গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি বার্লিনে একটি বেসরকারি বিনিয়োগ সংস্থায় অপারেশনস ম্যানেজার পদে কর্মরত। নিজের শিকড়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই তিনি এই চলচ্চিত্র নির্মাণে যুক্ত হন।

এর আগেও ‘প্যাপায়া’ আন্তর্জাতিক কলকাতা শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এ সেরা শিশু অভিনেতা এবং সেরা আদিবাসী চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে। অসমের গসনা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এও ছবিটি বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছে।

জনার এই সাফল্যে গর্বিত তাঁর পরিবার, এবং আনন্দে ভাসছে ঝাড়গ্রামের মানুষজন। প্রত্যন্ত গ্রামের এক সাধারণ যুবক কীভাবে নিজের শ্রম, মেধা আর শিকড়ের প্রতি টান দিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন, সেই গল্পই অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে হাজার হাজার মানুষের মনে।