চাকরি হারানোর যন্ত্রণা, দীর্ঘ লড়াই মাঝপথেই থামালেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক!

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বছর ৩৫-এর এই প্রাক্তন শিক্ষক।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
WhatsApp Image 2025-08-15 at 13.37.17

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: চাকরি হারিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর তালিকায় পড়ে। দিনমজুরের মতো সংগ্রাম করে আন্দোলনে যুক্ত থেকেছেন সবসময়। শেষমেষ সেই যন্ত্রণা আর স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিতে পারলেন না ঝাড়গ্রামের সুবল সোরেন। শুক্রবার সকালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বছর ৩৫-এর এই প্রাক্তন শিক্ষক।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ভাড়া বাড়িতেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউ না থাকায় কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও লাগাতার উচ্চ রক্তচাপের কারণে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। তবে শেষরক্ষা হল না – শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় তার।

WhatsApp Image 2025-08-15 at 13.33.51

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে ‘ব্রেন স্ট্রোক’-এ আক্রান্ত হন সুবল। দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত ওষুধ না নেওয়াই বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মেডিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, চাকরি হারানো ট্রমা কোনওভাবেই সামলাতে পারছিলেন না সুবল। স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকার খরচ টানতে গিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।

প্রিয় সহকর্মীর মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অন্যান্য চাকরিহারা শিক্ষকরা। অনেকেই হাসপাতালে পৌঁছে শাসক সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের কথায়, “এই মৃত্যু শুধু ব্রেন স্ট্রোকে নয়, সরকার ও প্রশাসনিক নিষ্ঠুরতার ‘প্রেশার’-এর ফল”। 

চাকরি হারানোর লড়াই-এর মাটিতে আর নামতে পারবেন না সুবল সোরেন। রেখে গেলেন দীর্ঘ আন্দোলনের বুকে আরও একটি শোকস্তম্ভ – আর এক সহযোদ্ধার অসমাপ্ত গল্প।