ভোটের মুখে আলুর দামে নাভিশ্বাস ! পকেটে টান মধ্যবিত্তের

খুচরো বাজারে আলুর দাম কবে আবার হাতের নাগালে আসে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে আমজনতা।  

author-image
Adrita
New Update
f

নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ ফের মহার্ঘ হল আলু। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার রেগুলেটেড বাজারসহ আরও অন্যান্য বাজারগুলিতে তড়তড়িয়ে বাড়ছে আলুর দাম। সপ্তাহ দুয়েক আগে খুচরো বাজারে যে আলুর দাম ছিল কেজি প্রতি ১৫-১৮ টাকা,তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকায়। নিত্য প্রয়োজনীয় এই আলুর দাম হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাগ হাতে বাজারে গিয়ে ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। হঠাৎ করে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে গিয়ে আগের তুলনায় কাটছাঁট করে পরিমাণ মতো কিনতে হচ্ছে আলু দাবি ক্রেতাদের।

বাজারের খুচরো বিক্রেতাদের দাবি, দিন পনেরো আগে আলুর দাম কেজি প্রতি কখনও ১৩-১৪ টাকা বা কখনও ১৫ বা ১৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে জ্যোতি আলু প্রতি কেজি ২৫ টাকা আর কেবাইস আলু কেজি প্রতি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। হঠাৎ খুচরো বাজারে আলুর দাম এতোটা কেনো বাড়লো ? জবাবে বাজারের বিক্রেতাদের দাবি, মাঠ থেকে আলু ওঠানোর সময় কৃষকদের কাছ থেকে আলু কিনে বিক্রি করা হতো, তখন দামও কিছুটা কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে হিমঘরে ব্যবসায়ীদের নামানো আলু তাদের থেকে দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ফলে তাদেরও বাজারে বেশি দাম ফেলে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বিগত পরপর কয়েক বছর আলু চাষে লোকসান হয়েছিল কৃষকদের, ব্যবসায়ীরাও লাভের মুখ দেখেনি। এবছর আলু চাষের শুরু থেকে শেষ অবধি আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনার সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করে চাষ করতে হয় কৃষকদের। কৃষকদের দাবি, এবছর চাষ করে কিছুটা লাভের মুখ দেখলেও ফলন কম হওয়ায় সেভাবে লাভের অংশ পকেটে আসেনি। বর্তমানে যে দাম বৃদ্ধি হয়েছে তার লভ্যাংশ ব্যবসায়ীরা পাচ্ছে। কিন্তু খুচরো বাজারে হঠাৎ করে আলুর দাম বৃদ্ধির কারণ কি ? তাহলে কি হিমঘর থেকে আলু নামিয়ে লাভের গুড় খাচ্ছে বড়ো ব্যবসায়ীরা ? তবে তা মানতে নারাজ চন্দ্রকোনা টাউন আলু ব্যবসায়ী সমিতি।

সমিতির পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, হিমঘর সবে মাত্র খুলছে এখনও সমস্ত হিমঘর খোলা হয়নি। আলুর চাহিদা ও জোগানের উপর দাম কমা বাড়া নির্ভর করে। বাজারে আলুর দাম বাড়ার কথা স্বীকার করে ব্যবসায়ী সমিতির দাবি যে, '' এবছর ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভ পাচ্ছে কিন্তু, বিগত তিনবছর তারা চরম লোকসানের মুখে পড়েছিল। "

জানা যায় যে, গতবছর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আলুর উৎপাদন হয়েছিল ২ কোটি ৯৮ লক্ষ প্যাকেট, এবছর আলুর উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৯০ লক্ষ প্যাকেট। এবছর আলুর ফলন গতবারের তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে। তবে এখনও চাষীদের ঘরে কাঁচা আলু বিক্ষিপ্ত ভাবে মজুত রয়েছে। তারপরও জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে খুচরো বাজারে আলুর দাম। যা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে। চাষীদের থেকে কেনা আলু খুচরো বাজারে কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। এখন হিমঘরে ব্যবসায়ীদের থেকে আলু কিনতে গিয়ে হটাৎ করে দাম এতোটা বেড়ে গেল কেনো এনিয়েই উঠছে প্রশ্ন। 

বাজারে আলুর দাম ক্রমশ বাড়া এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোটের মরসুমে সরকার বা প্রশাসনের তরফে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তবে বাজারে আলু কিনতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে তা স্পষ্ট আর দাম বাড়ায় বাজারে খুচরো বিক্রেতাদের বেচা কেনাতেও খানিক ভাটা পড়েছে জানাচ্ছেন তারা। খুচরো বাজারে আলুর দাম কবে আবার হাতের নাগালে আসে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে আমজনতা।  

Add 1