জেলা শাসকের অফিস চত্বরেই বিক্রি হচ্ছে জাল লটারি

প্রকাশ্যে জেলা শাসকের অফিস চত্বরেই বিক্রি হচ্ছে জাল লটারি।

author-image
Aniket
New Update
WhatsApp Image 2025-12-04 at 21.21.56

নিজস্ব প্রতিনিধি: লুকিয়ে নয়, বরং প্রকাশ্যে জেলা শাসকের অফিস চত্বরেই বিক্রি হচ্ছে জাল লটারি। আর সেই জাল লটারি বিক্রেতাকে হাতেনাতে ধরল রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা ' 'সিআইডি '। আর তাতেই তোলপাড় মেদিনীপুর। সিআইডি সূত্রে খবর, জাল লটারি কারবারির নাম টোটন দাস। তাঁর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের উত্তর তাঁতিগেড়িয়া এলাকায়। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে সিআইডির বিশেষ টিম। সিআইডি সূত্রে খবর ,  কোথায় ছাপা হচ্ছে জাল লটারি ?, কোন কোন এলাকায় সেই জাল লটারি বিক্রি হচ্ছে? এমনকি এর সঙ্গে কোনও প্রভাবশালী জড়িত কিনা! এই সমস্ত নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে গোয়েন্দারা। সিআইডির এক আধিকারিকের কথায়, রাজ্য জুড়েই জাল লটারি কারবারিদের  নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে। রাজ্যে  ৭৮টি থানা এলাকায় জাল লটারি ব্যবসা রয়েছে। তার মধ্যে উত্তর দিনাজপুর জেলায় ১০ টি থানা, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ১৫টি থানা, হুগলি জেলার ১০টি থানা ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৭টি থানা এলাকায় জোর কদমে চলছে জাল লটারির কারবার। এদিন জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। 

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেটের ভিতরে জাল লটারি সাজিয়ে বসেছিল টোটন। আচমকা তার চারিপাশ ঘিরে ফেলে গোয়েন্দাদের টিম। এরপর একজন গোয়েন্দা গিয়ে লটারি কেনার নাম করে দোকানে যান। জাল লটারি বার করতেই হাতে নাতে ধরা পড়ে টোটন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কথায়, জাল লটারির কারবারির থেকে কয়েক মিটার দূরেই আরটিও, জেলা শাসক, মহকুমা শাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলা শাসক ও একাধিক আধিকারিকের দফতর। কেউ বুঝে ওঠার আগেই টোটন'কে গ্রেফতার করে সাদা পোশাকে থাকা গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা। গোটা মেদিনীপুর শহর ছাড়াও খড়গপুর , ঘাটাল মহকুমাতেও জাল লটারির কারবারিদের জাল ছড়িয়ে রয়েছে। 
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বহু মানুষের নেশায় পরিণত হয়েছে এই লটারি খেলা। কারণ, লটারি কাটার পর ভাগ্য সাথ দিলেই রাতারাতি লাখপতি বা কোটিপতি হওয়ার হাতছানি। সেই স্বপ্ন দেখেন বহু সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। এরমাধ্যমে  চলে ভাগ্যের পরীক্ষা।  অনেকেই লটারি কেটে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে এলাকায় সেলিব্রিটিও হয়ে যান। জানা গিয়েছে, রাজ্যের জেলাগুলির মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর ছাড়াও, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লটারির বিশেষ প্রচলন রয়েছে। কিন্তু জঙ্গলমহলের এই জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে বেআইনিভাবে জাল লটারির বিক্রি আচমকা বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
এক লটারির ক্রেতা জানাচ্ছেন, জাল লটারি হুবহু একইরকম দেখতে। আসল লটারি খেলার রেজাল্টের সঙ্গে মিল রেখে এই লটারির রেজাল্ট তৈরি হয়। জাল লটারি পাঁচটির দাম ৩০ টাকা মতন পড়ে। জাল লটারিতেও কিউআর কোড ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কাগজটা আসল লটারির থেকে আলাদা। শুনেছি মেদিনীপুর জেলাতেই জাল লটারি ছাপানো হয়।
এনিয়ে সরব হচ্ছেন জেলা বিজেপি। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ - সভাপতি শঙ্কর গুছাইত বলেন, প্রশাসনের অফিস চত্বরে জাল লটারি বিক্রি হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই। জাল লটারির টাকায় তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে।