কলম কেড়েছে করোনা! রং-তুলিতেই ভরা সংসার শিল্পীর

ভালোলাগার কাজকে পেসা হিসেবে বেছে নিতে পারে খুব কম মানুষই। পূর্ব মেদিনীপুরের পঞ্চানন ভুঁইয়া শিল্পী হতে চেয়েছিলেন। এটাই তার পেশা এখন। দিন কাটে রং তুলির দুনিয়ায়।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
ম্ি্

নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুর : সালটা ছিল ২০২০। তিন বছর আগের কথা। উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়া। তার পর করোনা আর লকডাউনের জাঁতাকলে ছাড়তে হয় পড়াশোনা। দু চোখে স্বপ্ন ছিলো পড়াশোনার। সাথে সাথে  অঙ্কন শিল্পী হিসেবেও  নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। করোনার ফলে দীর্ঘ লকডাউনে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলো পরিবারের লোকজন। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পড়াশোনা আর করা হয়নি। অঙ্কনকেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়ে কাজ শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমারের কোলসর এলাকার যুবক পঞ্চানন ভুঁইয়া। তার তুলির টানে ফুটে উঠেছে ছোট থেকে বড় বিভিন্ন ধরনের দেব-দেবী,মনীষী, বিখ্যাত মানুষ ও প্রকৃতির জীবন কাহিনী। চাল,ঔষধ, বালির ছোট নুড়ির, ফেলে দেওয়া বোতলের ছিপি, নারকেলের মালা, সহ অন্যান্য  জিনিসপত্র দিয়ে নানান ধরনে ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন পঞ্চানন। সারা বছর ধরে নিত্য নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। তবে দুর্গাপুজার সময় ব্যস্ত হয়ে ওঠেন মন্ডপ সজ্জার কাজে। তার তৈরি মন্ডপ সজ্জা দার্জিলিং এর পাশাপাশি  রাজ্যের বিভিন্ন মন্ডপে ফুটে উঠবে। রাত দিন এক করে তারই কাজ করে চলেছেন পঞ্চানন।

পঞ্চানন জানান, ''আমাদের জেলার শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা  ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে তুলির টানে নানান জিনিস বানিয়ে,মন্ডপ সজ্জা করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছেন। তাকে দেখেই অনুপ্রেরণা পেয়েছি। পরিবারের হাতে অর্থ তুলে দিতেই এই কাজ শুরু করা। আগামীদিনে আর্ট নিয়ে কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে।''

পঞ্চাননের ছোট থেকেই ছবি আঁকার নেশা ছিলো। স্থানীয় এক শিল্পীর কাছে ছবি আঁকার প্রশিক্ষণ  নেন। তার পর নিজে নিজেই ছবি আঁকার কাজ শুরু করে। বর্তমানে এলাকার ছেলে মেয়েদের ছবি আঁকার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি  নিজের কাজ করে চলেছে পঞ্চানন।

মা রেবতী ভুঁইয়া জানান, ''ছেলে-মেয়ারা ভালো কাজ করলে মা-বাবা সকলেই খুশি হয়। আমরাও হয়েছি। তবে তার কাজ এলাকার মানুষ, জেলার মানুষ কতটা গ্রহণ করছে সেটাই দেখার। ও আগামীদিনে আরও এগিয়ে চলুক। এলাকার নাম সুনাম করুক এটাই চাইবো।''