জগন্নাথ মন্দিরের হাত ধরে আরও জমকালো হবে দিঘার আর্থিক সমৃদ্ধি, মানছেন ব্যবসায়ী থেকে পর্যটকরাও

দিঘায় এখন পর্যটকের পরিমান বেশ কয়েক গুন বেড়েছে৷

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
WhatsApp Image 2025-04-28 at 6.39.55 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুর : ছুটির একটা মুহূর্ত মানেই কলকাতার মানুষদের কাছে ঘুরে বেড়ানোর প্রথম পছন্দের জায়গা দিঘা। শীত হোক বা বর্ষা, গ্রীষ্ম হোক বা বসন্ত সপ্তাহান্তের ছুটিতে দিঘায় পর্যটকের ভিড় থাকে নজরকাড়া। রাজ্যে পালাবদলের পর গত কয়েক দশকে আমূল বদলে গিয়েছে দিঘার চেহারা। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এলাকার আর্থিক সমৃদ্ধিও। তবে এবার দিঘার মুকুটে যোগ হচ্ছে জগন্নাথ মন্দির। এর হাত ধরে দিঘা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ব্যাপক আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে বলেই আশাবাদী হোটেল ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। সোমবার বেলার দিকে দিঘায় পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, “বুধবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ আনুষ্ঠানিক ভাবে হবে জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন। তারপরেই মন্দিরের দরজা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে”।

দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের মতে, একটা সময় যাতায়াতের সমস্যা সহ পরিকাঠামোগত অনুন্নয়নের জেরে দিঘায় পর্যটকদের আনাগোনায় বিস্তর সমস্যা ছিল। সন্ধ্যা নামলেই ঘন অন্ধকারে ডুবে যেত দিঘার সমূদ্র সৈকত। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা যেতে চাইতেন না অধিকাংশ পর্যটক। এখন সময় বদলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত ধরে আমূল বদলে গেছে দিঘার চেহারা। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘার বিস্তীর্ণ সৈকত এখন বাঁধানো, আলো ঝলমলে। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অস্থায়ী স্টলগুলি এখন সাজানো-গোছানো। দিঘার রাস্তাঘাট থেকে পর্যটকদের সুরক্ষা, সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থা থেকে উন্নতমানের হোটেল সবকিছুই বিদ্যমান। এরই পাশাপাশি ট্রেন লাইনের মাধ্যমে উত্তবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত জুড়ে গিয়ে দিঘার জনপ্রিয়তা এখন গগনচুম্বী। আর পরিকাঠামোর এই উন্নয়নের জেরে দিঘায় পর্যটকের ভীড় এখন বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে।

এবার দিঘার জগন্নাথ মন্দির এই সৈকত নগরীর জনপ্রিয়তাকে আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। সোমবার তিনি জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পর জানান, “একদিকে আধ্যাত্মিকতা আর অন্যদিকে সম্প্রীতির মেলবন্ধন হয়ে উঠবে এই জগন্নাথ ধাম। দিঘার মতো জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এখন থেকে জগন্নাথ দেবের তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিগণিত হতে চলেছে। যার জেরে এই পর্যটন কেন্দ্রের জনপ্রিয়তা শীঘ্রই আন্তর্জাতিক স্তরেও খ্যাতি অর্জন করবে”। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “দিঘার জগন্নাথ মন্দির পর্যটনকেন্দ্রের মুকুটে একটি নতুন পালক যোগ করবে সন্দেহ নাই। আগে যে দিঘায় কিছুই ছিল না এখন সেখানে বিস্তীর্ণ বাঁধানো সৈকত, আলো ঝলমলে এলাকা। এটা দিঘার জন্য যথেষ্ট ভালো হবে”।

WhatsApp Image 2025-04-28 at 6.39.55 PM (1)

মুখ্যমন্ত্রীর কথার সুর ধরেই দিঘার হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশানের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চ্যাটার্জী জানান, “গত কয়েক দশকে দিঘায় পর্যটকে ভীড় অনেকগুন বেড়েছে। মাঝে করোনা মহামারি দিঘার হোটেল ব্যবসায় বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিল। তবে খুব কম সময়েই সেই দুর্বিষহ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছি আমরা। পর্যটকরা আবারও দিঘামুখি হয়েছেন। এবার জগন্নাথ ধাম যে দিঘার পর্যটকদের আকর্ষণে কেন্দ্র বিন্দু হয়ে উঠবে তাতে সন্দেহ নাই। এই মন্দিরের টানে দিঘায় পর্যটকদের আরও বেশী ভীড় উপচে পড়বে”।

রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি জানান, “দিঘা পর্যটন কেন্দ্র এখন অনেক বেশী আকর্ষণীয়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সৈকত নগরী এখন অনেক বেশী ঝাঁ চকচকে। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ বছরভর ছুটে আসেন দিঘার সমূদ্রে গা ভাসাতে। সেখানে জগন্নাথ দেবের মন্দির একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। এই মন্দিরের টানে ভ্রমণ পিপাষু মানুষদের পাশাপাশি জগন্নাথদেবের ভক্তকুলও এবার দিঘায় ছুটে আসবেন”। মানুষের ভীড় বাড়লে দিঘার আর্থিক সমৃদ্ধি আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলেই জানিয়েছেন অখিল।