কোচবিহারে প্রশাসনিক সভা থেকে কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশনকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রী মমতার

নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
495497-mamata2

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তরবঙ্গ সফরে এসে কোচবিহারে প্রশাসনিক সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা মঞ্চ থেকে রাজ্যে চলমান স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) ও বিএলও-দের উপর চাপ, হুমকি এবং নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, রাত গভীর পর্যন্ত বিএলও-দের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁর দাবি, “আগে SIR করা হত বছরে একবার, এখন এত তাড়াতাড়ি কেন? একটা কমিশন একপক্ষে হয়ে গেলে তাকে কী বলা যায়?” তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে রাজ্যে ৪১ জনের মৃত্যুর প্রসঙ্গও সামনে আসে, যা প্রশাসনের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।

Mamata

ডিটেনশন ক্যাম্প ইস্যুতে কড়া বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “বাংলায় ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেব না। মানুষ যেন সম্মান নিয়ে বাঁচে—সেটাই আমাদের লক্ষ্য”। তিনি অভিযোগ করেন, অসম থেকে রাজবংশী সম্প্রদায়ের বহু মানুষকে নোটিস পাঠানো হয়েছে এবং বাইরের রাজ্যের পুলিশ যেন রাজ্যে এসে কাউকে গ্রেফতার না করে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।

ভাষা ও পরিচিতি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় কথা বললেই কেউ বাংলাদেশি হয়ে যায় না। উর্দু বললেই পাকিস্তানি বলা চলে না”। তিনি ১৯৭১ সালের চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ওই সময় আসা মানুষদের নাগরিকত্ব সংবিধান অনুযায়ী স্বীকৃত।

ভোটার তালিকা সংশোধন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্য আলাদা করে খতিয়ে দেখা হোক। “একজন নাগরিকের একটাই ভোটাধিকার থাকবে—এটাই নিয়ম। যারা অন্য রাজ্যে ভোট দেয়নি, তাদের নাম বাদ দেওয়া যাবে না”, নির্দেশ দেন তিনি।

বিএলও-দের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষকে তাঁদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি জানানো হয়, সরকারের তরফে ‘May I Help You’ ক্যাম্প খোলা হবে যাতে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় সাহায্য পান।

সীমান্তবর্তী জেলা হিসেবে কোচবিহারে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার উপর বিশেষ জোর দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ বার্তা, “এলাকায় কোনও রকম অযথা হস্তক্ষেপ বা মাতব্বরি বরদাস্ত করা হবে না”।