বাংলাতে এবার মাংসাশী উদ্ভিদ!

এই উদ্ভিদ আগে কোথায় পাওয়া যেত?

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
WhatsApp Image 2025-12-04 at 6.12.27 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: দেখা মিলত শুধু আমাজনের গভীর অরণ্যে—এমন ধারণা ছিল বহু মানুষের। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের ধানঘোরী অঞ্চলের সিদাকুড়া গ্রামে রহস্যময় ‘মাংসাশী’ উদ্ভিদ দেখা মিলতেই এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও পোস্টে সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে কৌতূহল থেকে উদ্বেগ—বাংলাতেও কি মাংসাশী উদ্ভিদ জন্মায়?

গত বছর বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায়ও মিলেছিল অনুরূপ প্রজাতি। এবার সিদাকুড়া র জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় দেখা গেছে ছোট লাল–কমলা বর্ণের এক অদ্ভুত উদ্ভিদ। পাথুরে ও স্যাঁতস্যাঁতে জমিতে জন্মানো এই উদ্ভিদের উজ্জ্বল রং পোকামাকড়কে আকৃষ্ট করে।

উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটি আসলে বিখ্যাত ‘সূর্যশিশির’ বা আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত সানডিউ উদ্ভিদ। আফ্রিকান উৎসের হলেও বহু বছর ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ার জঙ্গলাঞ্চলে এর অস্তিত্ব রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মানুষ ভুল করে একে ‘মাংসাশী’ বলছেন। এই উদ্ভিদ বড় কোনও প্রাণীর ক্ষতি করে না। পাতার শুঁড়ের ডগায় শিশির বিন্দুর মতো আঠালো রসে ছোট পিঁপড়ে ও পোকামাকড় আটকে যায়, আর সে‌ই পুষ্টি গ্রহণ করে উদ্ভিদ। তাই একে মাংসাশী বলা হলেও এটি মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর জন্য সম্পূর্ণ নিরীহ। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভ্রান্তিতে কোথাও কোথাও মানুষ ভয়ে গাছ নষ্ট করে দিচ্ছেন, যা উদ্বেগজনক। কারণ এই প্রজাতি ভারতে বিলুপ্তপ্রায়—তাই সংরক্ষণ জরুরি।

বনদপ্তর ইতিমধ্যেই সূর্যশিশিরের অস্তিত্ব থাকা অঞ্চলগুলি চিহ্নিত করছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াচ্ছে। বনদফতরের স্পষ্ট বার্তা—সূর্যশিশির বহুদিন ধরেই এই অঞ্চলে রয়েছে এবং একেবারেই নিরীহ। আতঙ্ক নয়, সংরক্ষণই প্রধান দায়িত্ব।

Screenshot 2025-12-04 190652