দাদা-ভাইয়ের সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ, তার জেড়ে মাঠে পড়েই নষ্ট হচ্ছে চাষের সবজি

সালিশি সভা ডাকা হয় দাদা ভাইয়ের বিবাদ মেটানোর জন্য।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
WhatsApp Image 2025-03-29 at 20.33.18

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর: মাঠের ফসল আলু, অর্ধেক খোলা অবস্থায় মাঠে পড়ে নষ্ট হচ্ছে, অর্ধেক আলু এখনও খুলতে না পেরে জমিতেই পোঁচছে। এদিকে গ্রামে সালিশির পর বাড়ি ছাড়া পরিবার। আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে অভিযোগকারী। 

অভিযোগকারীর নাম ভাস্কর মণ্ডল, বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আকতকলা গ্রামে। ভাস্কর মণ্ডলের পরিবার বলতে স্বামী স্ত্রী, দুই মেয়ে তাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, ছেলে নেই। ঘটনা প্রসঙ্গে, আকতকলা গ্রামের বাসিন্দা ভাস্কর মণ্ডলের অভিযোগ, তার ভাই দিবাকর মণ্ডল দেনা শোধ করার পরিবর্তে তার জমি প্রায় ২০ বছর আগে ভাস্কর মণ্ডলের নামে লিখে দিয়েছিল। ভাইয়ের থেকে সেই জমি নিয়ে রেজিস্ট্রি ও রেকর্ডভুক্ত হয় তার নামে। বর্তমানে সেই জমির আইনত কাগজপত্র ভাস্কর মণ্ডল তথা অভিযোগকারীর নামে।

দাদা ভাইয়ের এই সম্পত্তির বিবাদ দীর্ঘদিনের। দাদা ভাস্কর মণ্ডল তার ভাই দিবাকর মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্থানীয় শাসকদলের নেতা ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী অলোক মণ্ডলের মদতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দাদার নামে লিখে দেওয়া সম্পত্তি পুনরায় ফেরত পাওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ। চলতি মাসের ০২.০৩.২০২৫ তারিখে গ্রামে একটি সালিশি সভা ডাকা হয় দাদা ভাইয়ের এই সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ মেটানোর জন্য। অভিযোগ সেই সালিশি সভায় গ্রামের বেশকিছু মানুষের সাথে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা সহ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী অলোক মণ্ডলও। সেই সালিশি সভায় ভাই দিবাকর মণ্ডলকে ০৭.০৩.২০২৫ তারিখের মধ্যে জমি লিখে দেওয়ার ফরমান দেওয়া হয় ভাস্কর মণ্ডলকে। 

e4hr5uhj

অভিযোগ, সালিশি সভার এই ফরমান মেনে না নেওয়ায় হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদেরকে। স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়া হন ভাস্কর মণ্ডল। আর আলু অর্ধেক খোলা অবস্থায় মাঠে পড়েই নষ্ট হচ্ছে। এনিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা না হওয়ায় সম্প্রতি মেইল মারফত অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার চেষ্টা করছেন ভাস্কর মণ্ডল। এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে চন্দ্রকোনার আকতকলা এলাকায়।

যদিও ভাস্কর মণ্ডলের তোলা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ভাই দিবাকর মণ্ডলের স্ত্রী মহিমা মণ্ডল। দিবাকরের ভাইও এদিন এই একই কথা বলেন।

ভাই দিবাকর মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযোগকারী ভাস্কর মণ্ডলকেই দুষছেন গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দাও। 

যদিও এবিষয়ে চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও উৎপল পাইক জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ তার জানা নেই। স্বাভাবিক ভাবেই, দাদা ভাইয়ের জমি সংক্রান্ত সম্পত্তির বিবাদ আর তাতে শাসকদলের নেতাদের নাম জড়ানো নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে চন্দ্রকোনায়।